You are currently viewing অন্যরকম স্বেচ্ছাচারিতা – খন্দকার সাইফুর রহমান

অন্যরকম স্বেচ্ছাচারিতা – খন্দকার সাইফুর রহমান

  • Post category:Book Review

বইয়ের নামঃ অন্যরকম স্বেচ্ছাচারিতা
লেখকের নামঃ খন্দকার সাইফুর রহমান

প্রথম প্রকাশঃ অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭
ধরণঃ বাস্তবতা ভিত্তিক, সামাজিক উপন্যাস

প্রকাশকঃ মোঃ হাবিবুর রহমান
জিনিয়াস পাবলিকেশন্স
৩৮,বাংলাবাজার,ঢাকা-১১০০
বইয়ের মূল্যঃ ২৫০

To buy this book, click.


কখনো কি হয়েছে দেখা
রক্তজবার নিঃসঙ্গতা…
কখনো কি হয়েছে জানা
তমাল তলে হয় কত সম্পর্কের যবনিকা..
বন্ধুত্বেরও থাকে অসীম গভীরতা
এটাও এক অন্যরকম স্বেচ্ছাচারিতা…


“অন্যরকম স্বেচ্ছাচারিতা” গল্পে এক ভিন্নধর্মী স্বেচ্ছাচারিতা লক্ষ্য করা যায়। আমাদের সমাজে এক ধরণের মানুষ আছে যারা নিজে থেকে অনুভব করে অন্যের অনুভূতি গুলোকে। তারা মূল্য দিতে জানে অন্যের স্বপ্নের, ভালোলাগার কিংবা ভালোবাসার। এই অনুভব নিজের মধ্যে স্বেচ্ছায় কেউ সৃষ্টি না করলে অন্যের দ্বারা সৃষ্টি করা সম্ভব না। কারো কারো মাঝে সৃষ্টি হয়ও না। সত্যিই কি সৃষ্টি হয়না? কেন হয়না? এটাই কি তাহলে স্বেচ্ছাচারিতা? এ কেমন ধরনের স্বেচ্ছাচারিতা? এমন সহস্র বাস্তবমুখী প্রশ্নের মুখোমুখি করে লেখক “খন্দকার সাইফুর রহমানের” এই উপন্যাস।

জীবনের সায়াহ্নে এসে প্রিয় মানুষ গুলোর অচেনা হয়ে উঠা। তাদের সেই তমসা’ময় সত্ত্বার কথা লেখক প্রস্ফুটিত করেছেন তার লেখায়। উনার লিখায় যেন ফিরে ফিরে আসে সত্ত্বার কাছে সত্ত্বার বিশ্বাস,ভরসা, আত্মীক সম্পর্কের নানান জটিলতা।

কাহিনী সারসংক্ষেপ


সাগর ও আকাশ দুই বন্ধু।সাগর সুদর্শন, চাকরিজীবী। বড় ভাই সৈকত, ভাবী সুমনা, একমাত্র ভাতিজি ছোট্ট টুম্পা, বৃদ্ধা মা এবং প্রিয় বন্ধু আকাশকে নিয়েই তার সুখময় জীবন যাপন।
আকাশও চাকরিজীবী, ভিসা হয়ে গেলেই পাড়ি জমাবে দূর দেশে। তার আগে তার প্রেমিকা রুনাকে সে বিয়ে করে রেখে যাবে তার বাড়িতে। এমনটাই কথা দেয়া তাদের দুই পরিবারের। আর রয়েছে সাগরের সাথে আকাশের বন্ধুত্বের অটুট বন্ধন, এই নিয়েই আকাশের জীবন।

সাগর ভালোবেসেছিলো অনামিকাকে। মেঘের খামে কত সহস্র ভালোবাসার তীব্র যন্ত্রণার চিঠি পাঠিয়েছিলো অনামিকাকে। কত কল্পনার পাখায় ভর করে নীল আকাশে ভেসে বেড়াতো অনামিকাকে নিয়ে। সেই সব কিছু এক নিমিষে কাল বৈশাখী ঝড়ের মত দুমড়ে মুচড়ে দেয় অনামিকা। কারণ অনামিকা প্রতারণা করেছিলো সাগরের সাথে। অনামিকা ছিলো সাগরের বন্ধু আকাশের প্রেমিকা রুনা। অবশেষে, না, অনামিকা পেরেছিলো সাগরকে কল্পনায় ভাসিয়ে বাস্তবে তার কোনো রূপ দিতে। আর, না রুনা পেরেছিলো আকাশের সাথে এতদিনের সম্পর্কের একটা শুভ পরিণয় দিতে। রুনা এবং অনামিকা, তারা যে, একই ব্যক্তির দুটি ভিন্ন সত্ত্বা। এটাই কি তাহলে স্বেচ্ছাচারিতা? অনামিকার মোহময় এই ভণিতা শুধুই কি স্বেচ্ছাচারিতা?  উপন্যাসই কী আর বাস্তব জীবনই কী, মানুষ বাঁচে তার অস্তিত্বে, তার মধুর কল্পনায় এবং চিরন্তন সত্য কর্মে। রুনা বা অনামিকা কেউ কি বুঝেছিলো এ কেমন ধরণের স্বেচ্ছাচারিতা?
অথচ সাগর ও আকাশের বন্ধুত্ব কত অটুট, কতটা অসংজ্ঞায়িত। কত সহস্র উপমা’ময়। এটাই বা কেমন স্বেচ্ছাচারিতা? তাদের বন্ধুত্ব কতটা আবেগপ্রবণ, নিঃস্বার্থ।

পাঠ প্রতিক্রিয়া


উপন্যাসের নামটি বড় দুর্বোধ্য। একদিকে দুই বন্ধুর ত্যাগের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে রুনা ও অনামিকার মত ছলনাময়ী প্রেয়সী। তাদের ফিরে পাওয়ার সেই আকুলতা, ছলনার প্রতিদান হিসেবে পাওয়া কি এক কঠিন ব্যর্থতা, নিঃসঙ্গতা। এমনই সমান্তরালে কেন্দ্রীভূত বাস্তবতার সচিত্র ফুটে উঠেছে লেখকের লিখায়।

চরিত্র বিশ্লেষণ
এই উপন্যাস জুড়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন বেশ কিছু চরিত্র।কেউ তরুণ,কেউ মধ্যবয়সী, কেউ বৃদ্ধ আবার কেউবা শিশু।ভিন্ন চরিত্র হলেও এরা কোথাও যেন অভিন্ন,আবার কোথায় যেন নিতান্তই স্বেচ্ছাচারী।

চুম্বক লাইন
টকষ্টটা একান্ত নিজের আর আনন্দটা সবার জন্য। তাই তোমার কষ্টটা না হয় তোমারই থাক’।

‘এ কি! সর্বনাশের খেলা খেলেছো তুমি রুনা। আমার কথা কি তোমার একবারও মনে পড়েনি? আমাদের অনাগত ভবিষ্যতের কথা, আমাদের সেই সব স্বপ্নের কথা?’

                                                               To buy this book, click.

লিখেছেন,

নাহিদা সুলতানা ইলা

Leave a Reply