You are currently viewing আম বিত্তান্ত

আম বিত্তান্ত

  • Post category:Others

আম পছন্দ করেনা এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। আমের স্বাদ যেমন ভালো তেমনি গুণেও অসাধারণ।

আপনি কি জানেন, আমের বেশ কিছু ঔষধি গুণের পাশাপাশি প্রত্যেকটা আমের নামকরণে রয়েছে মজার কিছু ইতিহাস?

উত্তরটি যদি আপনার জানা থাকে তাহলে বেশ ভালো। আর যদি উত্তরটি জানা না থাকে তাহলে আজকের আর্টিকেলটি আপনার জন্য! 

আম শব্দটি শুনলে প্রথমেই আমের কতগুলো প্রজাতির নাম আমাদের মনে আসে। যেমন: ল্যাংড়া, ফজলি, গোপালভোগ, মোহনভোগ ইত্যাদি। এছাড়া আমের মনোহরা কিছু নামও রয়েছে। যেমন: কোহিনুর, দিল খোস, সুবর্ণরেখা, বাবুই ঝাঁকি, চৈতালি, শ্রাবণী ইত্যাদি। বহু বছর ধরে আভিজাত্য বহন করছে আমের এই অদ্ভুত নামগুলো।

বাজারে আম কিনতে গেলে কখনো খুঁজছেন ল্যাংড়া কখনো ফজলি আবার কখনোবা হিমসাগর। কিন্তু কখনো কী ভেবেছেন, ভিন্ন ভিন্ন নাম গুলো কোথা থেকে আসলো? প্রতিটি আমের নামকরণের পিছনে কিন্তু রয়েছে একেকটি ইতিহাস।

তাহলে চলুন জেনে আসি আমের নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে –

ল্যাংড়া আম: মুঘল আমলে দ্বারভাঙ্গায় এই আমের চাষ শুরু হয়। কিন্তু সেই সময় কেউ এর নাম নিয়ে মাথা ঘামায়নি। পরে আঠারো শতকে এক ফকির আমের চাষ করেন। সেই ফকিরের পায়ে কিছু সমস্যা ছিল। সেই থেকেই নাকি ওই আমের নাম হয়ে যায় ‘ল্যাংড়া’।

ফজলি আম: ১৮০০ সালে ভারতের মালদহ জেলার কালেক্টর রাজভনেশ ‘ফজলি’ আমের নামকরণ করেন। প্রচলিত আছে, ফজলি বিবি নামক এক বৃদ্ধা বাস করতো স্বাধীন সুলতানদের ধ্বংসপ্রাপ্ত গৌড়ের একটি প্রাচীন কুঠিতে। তার বাড়ির উঠোনে ছিলো একটি আম গাছ। ফজলি বিবি এই গাছটির খুব যত্ন নিতেন। গ্রামের ফকির বা সন্ন্যাসীদের সেই আমের ভাগ দিতেন তিনি। একবার ফজলি বিবির কুঠিরের কাছে শিবির স্থাপন করেন কালেক্টর রাজভেনশ। কালেক্টরের আগমনের খবর পেয়ে ফজলি বিবি সেই আম নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করেন।আম খেয়ে কালেক্টর খুব তৃপ্ত হন।তিনি আমের নাম জানতে চান। কিন্তু ইংরেজি না বুঝে শুধু ‘নেম’ শুনেই নিজের নাম বলে দেন ফজলি বিবি। সেই থেকেই এই আমের নাম হয় ‘ফজলি আম’।

এবার আমরা জেনে নিই আমের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে: 

কাঁচা আম:- (১) কাঁচা আমকে শুকিয়ে সেটাকে পাউডার তৈরী করলে সেই পাউডারকে বলা হয় ‘আমচুর’। এটি স্কার্ভি রোগের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

(২) কাঁচা আমের সঙ্গে জিরা, লবণ, চিনি মিশিয়ে সেদ্ধ করে জুস করে খেলে গ্রীষ্মকালে স্ট্রোকের ঝুকি হতে রক্ষা করে। এছাড়াও কাচা আম মর্নিং সিকনেস,স্কিন ক্যান্সারের মত জটিল রোগও নিরাময় করে।

পাকা আম:-(১) নিয়মিত পাকা আম খেলে যকৃত ভালো থাকে।

(২) পাকা আম বলপ্রদ,পিত্তনাশক ও কফনাশক।

(৩) পাকা আম চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

আমের পাতা:-

(১) আমের নতুন পাতা শুকিয়ে গুড়ো করে ব্যবহার করলে বহুমুত্র প্রশমিত হয়।

(২) আম পাতা পুড়ে ছাই করে সেই ছাইকে ঘি বা নারিকেল তেলের সাথে মিশিয়ে ঘায়ে মাখলে দ্রুত পোড়া ঘা সেরে যায়।

আম খেতে তো সবাই ভালোবাসি কিন্তু আমের এই ঔষধি গুনাগুণ এবং আমের নামকরণের ইতিহাস সম্পর্কে কয়জনই বা জানি।

আমাদের চারপাশে ছড়িয়ে রয়েছে নানা উদ্ভিদ,ফুল,ফল যাদের প্রায় সকলেরই রয়েছে এরকম ঔষধি গুনাগুন এবং নানা মজার তথ্য। এই তথ্য গুলো জানতে আপনার কি কৌতুহল হয়না? যদি হয়, তাহলে সেই কৌতুহল পূরণ করতে এই সম্পর্কে লেখা বই গুলো পড়ুন।বাজারে অনেক বই পাওয়া যায়।

বেশি বেশি বই পড়ুন এবং আপনার জ্ঞান ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করুন।

Leave a Reply