You are currently viewing ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (OIC)

ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (OIC)

OIC

  • পূর্ণরূপঃ Organisation of Islamic Cooperation
  • প্রতিষ্ঠাঃ ১৯৬৯ সাল
  • পটভূমিঃ ১৯৬৭ সালে আল-আকসা মসজিদে অগ্নি সংযোগের ফলে OIC গঠিত হয়
  • প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্যঃ ২৪টি
  • বর্তমান সদস্যঃ ৫৭টি
  • সর্বশেষ সদস্যঃ আইভেরিকোস্ট (২০০১)
  • সদর দফতরঃ জেদ্দা, সৌদি আরব
  • পর্যবেক্ষক সদস্যঃ বসনিয়া হার্জগোভেনিয়া, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, উত্তর সাইপ্রাস, থাইল্যান্ড ও রাশিয়া
  • OIC এর পর্যবেক্ষক স্নজ্ঞঠনঃ আরব লীগ, জাতিসংঘ, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন, আফ্রিকান ইউনিয়ন, MNLF, ECO
  • OIC এর পর্যবেক্ষক হতে আবেদিত সদস্যঃ ভারত, ফিলিপাইন
  • OIC এর প্রথম সম্মেলনঃ ১৯৬৯ সালে রাবাতে(মরক্কো)
  • সম্মেলন হয়ঃ তিন বছর পর পর
  • OIC এর প্রথম মহাসচিবঃ টেংকু আবদুর রহমান( মালয়েশিয়া)
  • বর্তমান চেয়ারম্যানঃ রিসেপ তায়েপ এরদোগান(তুরষ্ক)
  • বাংলাদেশ সদস্য হয়ঃ ১৯৭৪ সালে
  • অমুসলিম হয়েও OIC এঁর সদস্যঃ উগান্ডা, রুয়ানা, ক্যামেরুন,বেনিন, সুরিনাম, গায়না ও মোজাম্বিক
  • সম্প্রতি কোন অমুসলিম দেশ OIC এঁর সদস্য হতে আবেদন করেছে?- রাশিয়া
  • OIC এঁর মহাসচিবের মেয়াদকাল- ৫ বছর( আগে ৪ বছর ছিল) 
  • সম্প্রতি কোন দেশের সদস্যপদ বাতিল করা হয়?- সিরিয়া( ১৫ আগস্ট, ২০১২)

প্রতিষ্ঠার ইতিহাসঃ


১৯৬৭ সালের জুন যুদ্ধের পর ইসরাইল ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট জেরুজালেমের মসজিদুল আকসায় অগ্নিসংযোগ করে । এর তড়িৎ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় গোটা মুসলিম বিশ্বে । ২৫ আগস্ট ১৪ টি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা কায়রোতে আলোচনায় বসেন । ঐ বৈঠকে সৌদি আরব প্রস্তাব করে যে , বিষয়টি যেহেতু গোটা  মুসলিম বিশ্বের জন্য স্পর্শকাতর তাই এটি নিয়ে আলােচনার জন্য সকল মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের একটি শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করা জরুরি । মরক্কো , সৌদি আরব , ইরান , পাকিস্তান , সোমালিয়া, মালয়েশিয়া ও নাইজারকে নিয়ে একটি প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয় । বিস্ময়কর দ্রুততার সাথে সে বছরই ২২ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর তিন দিনব্যাপী একটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় রাবাতে । এ ঐতিহাসিক সম্মেলনে ২৫ টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা সম্মেলন শেষে যুক্ত ঘোষণায় আরো অনেক বিষয়ের সাথে বলা হয় ইসরাইলকে অবিলম্বে ১৯৬৭ সালের পূর্ব সীমানায় ফিরে যেতে হবে । তাছাড়া সম্মেলনে একটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল পিএলওকে তার জাতীয় মুক্তি সংগ্রামের প্রতি সর্বসম্মত সমর্থন প্রদান । ইসলামী শীর্ষ সম্মেলনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১৯৭০ সালের ২২ থেকে ২৭ মার্চ প্রথমবারের মতো মুসলিম মন্ত্রীদের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় । এ সম্মেলনে একটি স্থায়ী সেক্রেটারিয়েট প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং জেলায় এ সেক্রেটারিয়েট প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তও তখনই গৃহীত হয় । এমনকি একই সাথে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী টেংকু আবদুর রহমান এই সেক্রেটারিয়েটের সেক্রেটারি জেনারেল মনোনীত হন ।


ওআইসির ৭ টি লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সংক্ষেপে হলো:
১. সদস্য রাষ্ট্রসমূহের মধ্যে ইসলামী সংহতি বৃদ্ধি করা ।
২. অর্থনৈতিক , সামাজিক , সাংস্কৃতিক , বৈজ্ঞানিক এবং কাজের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রসমূহে সদস্য রাষ্ট্রসমূহের সহযােগিতা সংহত করা এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে নিজেদের মধ্যে শলা পরামর্শ করা ।
৩. সকল প্রকার বর্ণ বৈষম্যের মূলোচ্ছেদ এবং সব রকমের উপনিবেশবাদের বিলোপ সাধনের চেষ্টা করা ।
৪. সুবিচারভিত্তিক আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি প্রয়ােজনীয় সমর্থন দান ।
৫. পবিত্র স্থানসমূহের নিরাপত্তা বিধানের সগ্রামকে সমন্বিত সুসংহত করা এবং ফিলিস্তিনি জনগণের ন্যায্য সংগ্রামকে সমর্থন করা এবং তাদের অধিকার আদায় ও দেশ মুক্ত করার কাজে সাহায্য প্রদান ।
৬. মুসলমানদের মান – মর্যাদা , স্বাধীনতা ও জাতীয় অধিকার সংরক্ষণের সকল সংগ্রামে মুসলিম জনগণকে শক্তি যোগানো ।
৭. সদস্য রাষ্ট্রসমূহ এবং অন্যান্য দেশের মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতা বৃদ্ধির জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা ।

OIC এর বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৫৭ টি। এর সদর দপ্তর সৌদি আরবের জেদ্দায় অবস্থিত। প্রথম মহাসচিব মালয়শিয়ার প্রধানমন্ত্রী টেংকু আবদুর রহমান। বর্তমান মহাসচিব সৌদি আরবের আইয়াদ বিন আমীন মাদানী।
OIC এর অঙ্গ-সংগঠন ১১ টি।

১. ইসলামিক সম্মেলন,

২. পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাউন্সিল,

 ৩. স্ট্যান্ডিং কমিটি,

 ৪. নির্বাহী কমিটি,

৫. আন্তর্জাতিক ইসলামী বিচার আদালত,

৬. মানবাধিকার বিষয়ক স্বাধীন স্থায়ী কমিশন,

৭. স্থায়ী প্রতিনিধি কমিটি,

৮. সাধারণ সচিবালয়,

 ৯. সাবসিডিয়ারি অর্গান,

 ১০. বিশেষায়িত ইনিস্টিটিউট,

১১. অনুমোদন ইনিস্টিটিউট।


সংস্থাটির ৪ টি স্ট্যান্ডিং কমিটি রয়েছে। তা হলো- ১. আল কুদ্দুস কমিটি, ২. স্ট্যান্ডিং কমিটি ফর ইনফরমেশন অ্যান্ড কালচার অ্যাফেয়ার্স, ৩. স্ট্যান্ডিং কমিটি ফর ইকোনমিক অ্যন্ড কমার্শিয়াল কো-অপারেশন, ৪. স্ট্যান্ডিং কমিটি ফর সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল কো-অপারেশন।


OIC মুসলিম বিশ্বে জাতিগত ও ধর্মীয় ঐক্য স্থাপন,  নির্যাতন প্রতিবাদে অনেক অংশে সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিন সংকট, আফগান সমস্যা,  উপসাগরীয় সংকট প্রভৃতি সমস্যা সমাধান করতে পারছে না।
OIC এখনো পর্যন্ত তাদের প্রতিষ্ঠিত উদ্দেশ্য সফলভাবে বাস্তাবায়ন না করলেও তাদের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাদের প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন হবার ফলে তারা তাদের বিভিন্ন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। এ বিশ্বে মুসলিম শাসন কায়েমের জন্য OIC এর সদস্য রাষ্ট্রগুলোর এক হয়ে কাজ করতে হবে। কারণ বিশ্বের অধিকাংশ প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদের মালিক এই সদস্য রাষ্ট্রগুলো। তাই এইগুলো পুজি করে বৃহত রাষ্ট্রগুলোর সাথে যেকোন কাজের মোবাবেলা করতে পারবে এবং মুসলিম নেতৃত্ব তাদের অতীত গৌরব ফিরে পাবে।


লিখেছেন,

কে. এম. মুহাইনেনুল ইসলাম তুহুন

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় 

This Post Has 2 Comments

  1. Ripon Gain

    অনেক তথ্যবহুল একটি লেখা।আশা করবো ভবিষ্যতে আর কিছু নিয়ে লিখবেন।।
    ধন্যবাদ আপনাকে।

  2. Md. Mizanur Rahman

    চমৎকার লেখনী।
    আরো এরকম তথ্যবহুল লেখা চাই।

Leave a Reply