You are currently viewing উইলিয়াম কেরি

উইলিয়াম কেরি

 উইলিয়াম কেরি

উইলিয়াম কেরি বাংলায় গদ্য পাঠ্যপুস্তকের প্রবর্তক,অনুবাদক,ব্রিটিশ খ্রিষ্টান ধর্ম যাজক,একজন মিশনারী, সামাজিক সংস্কারক এবং সাংস্কৃতিক নৃ-তত্ত্ববিদ। তিনি ব্যাপ্টিস্ট মিশনারী সোসাইটি, এবং প্রথম ডিগ্রী প্রদানকারী বিশ্ববিদ্যালয় ও শ্রীরামপুর কলেজের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা।বাল্যকাল থেকেই কেরি ছিলেন জ্ঞান পিপাসু। তখন থেকেই প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, বিশেষত উদ্ভিদ বিদ্যায় কেরির ছিলো গভীর আগ্রহ।ছয় বছর বয়সে তার পিতা তার জন্য স্থানীয় চার্চ সম্প্রদায়ের করণিক ও গ্রাম্য স্কুল শিক্ষককে নিযুক্ত করেন।

১৭৯৩ সালের নভেম্বর মাসে তিনি ও তার সহযাত্রীগণ কলকাতায় আসেন।১৭৯৮ সালে উইলিয়াম কেরি শ্রীরামপুর ছাত্রাবাস স্থাপন করেন।
১৮০৩ সালে তিনি নিজের মত করে একটি মিশনারি স্থাপন করেন।১৮০৫ সালে তার মারাঠি ব্যাকরণ প্রকাশিত হয়।১৮০৭ সালে তাকে ব্রাউন ইউনিভার্সিটি ডক্টর অফ ডিভিনিটি ডিগ্রী প্রদান করেন।

১৮০৯ সালে তিনি সম্পূর্ণ বাইবেলের অনুবাদ করেন।সেই সালেই তা ছাপা হয়।১৮১২ সালের ১১ই মার্চের সন্ধ্যায় তার প্রতিষ্ঠিত শ্রীরামপুর ছাপাখানায় আগুন লাগে।এই আগুনে পুড়ে ক্ষতির পরিমাণ ছিলো প্রায় ১ লাখ ৩৩হাজার টাকা।এই সংবাদ কলকাতায় পৌঁছালে সেখান থেকে আট হাজার দুইশত টাকা সংগৃহীত হয়েছিল। ইংল্যান্ডে খবর পৌঁছানোর পর দুই মাসের মধ্যে প্রায় ১লাখ ৪২ হাজার টাকা সংগৃহীত হয়।একই বছরই কেরির পুস্তক “ইতিহাস মালা” প্রথম প্রকাশিত হয়।এই গ্রন্থে প্রায় ১৫০ টি শিরোনামের নানা স্থানের ১৪৮ টি গল্প মুদ্রিত হয়।

১৮১৪ সালে ভারতবর্ষের জনসাধারণের জন্য তিনি সরকারের কাছে বিজ্ঞান বিষয়ক প্রস্তাব পেশ করেন।১৮১৮ সালে ‘দিকদর্শন’ নামে একটি মাসিক পত্রিকা, ‘সমাচার দর্পণ’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা এবং ‘Friends Of India’ নামে একটি ইংরেজি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়।একই বছরে শ্রীরামপুর কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮২২ সালে তার জীবনের বড় ধরনের দুটি দুঃখজনক ঘটনা ঘটে।সে বছর তার পুত্র ফেলিক্স কেরি মৃত্যুবরণ করে এবং ভারতীয় ১৩টি প্রধান ভাষার সর্বশব্দ কোষ আগুনে সম্পূর্ণ ভষ্মীভূত হয়ে যায়।

১৮২৯ সালে ৫ ডিসেম্বর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক সতীদাহ প্রথা নিষিদ্ধ করে একটি আইন জারি করে।এবং সেটির বাংলা অনুবাদের জন্য কেরির কাছে পাঠান।সারাদিনে সেটি অনুবাদ করে নিজেই বেন্টিঙ্কের কাছে পৌছে দেন।সেই দিনই ঘোড়ায় চড়ে কলকাতার আশেপাশের লোকদের এই আইনের কথা জানান আর ১৮৩০ সালে ফোর্ট উইলিয়াম কলেজটি বন্ধ হয়ে যায়।যেখানে কেরি প্রায় ৩১ বছর বাংলা বিভাগের অধ্যক্ষ ছিলেন।তিনি বাংলা মুদ্রণেরও প্রবর্তক।

৭৩বছর বয়সি কেরির মহান কর্ম জীবনের পরিসমাপ্তি ঘটে ১৮৩৪ সালের ৯জুন।এরপর তাকে শ্রীরামপুর ব্যাপ্টিস্ট মিশনারীদের সমাধি ক্ষেত্রে সমাহিত করা হয়।

লিখেছেন-

নাহিদা সুলতানা ইলা

শেরপুর সরকারি কলেজ। 

Leave a Reply