You are currently viewing উদ্যোক্তা কথন  ‘বিষয় – পরিকল্পনা’

উদ্যোক্তা কথন ‘বিষয় – পরিকল্পনা’

 

বাংলাদেশে সম্প্রতি অনলাইন ব্যবসা বা ই-কমার্স অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে এই সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তো বটেই, নতুন উদ্যোক্তাদের অনেকে সরাসরি ওয়েবসাইট খুলে অনলাইনে সেবা ও পণ্য বিক্রির ব্যবসা শুরু করছেন। আবার অনেকের ব্যবসা ফেসবুক ভিত্তিক। সব ধরণেই পণ্যই এখন বাংলাদেশে অনলাইনে কেনা-বেচা হয়। এর মধ্যে পচনশীল দ্রব্য- ফলমূল শাকসবজি যেমন আছে, তেমনি কাপড়-চোপড় ইলেকট্রনিক দ্রব্যও আছে।

কিন্তু বর্তমানে দেখা যাচ্ছে উদ্যোক্তারা সঠিক পরিকল্পনার অভাবে ব্যবসাকে সাজিয়ে তুলতে পারছেন না। আজ যদি কাপড়ের ব্যবসা করে কাল দেখা যাচ্ছে ইলেকট্রনিক জিনিসের ব্যবসা শুরু করছেন। নির্দিষ্ট একটা উদ্যোগে ফোকাস না থাকায় অনেক উদ্যোক্তায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আপনাদের এই ক্ষতি পুষিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তে সাহায্য করার জন্যে আমাদের ছোট প্রচেষ্টা “Entrepreneurs’ Podium ” যা ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকবে।

 

আজ শুরু হচ্ছে প্রথম পর্ব। বিষয় – পরিকল্পনা

 

যেকোনো ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনার প্রথম কাজ হওয়া উচিত “পরিকল্পনা”

পরিকল্পনা: আগে ভাবুন কি পণ্য বা সেবার ব্যবসা করবেন?

আপনি কী বিক্রি করতে চান, সেটা কোথা সংগ্রহ করা হবে, কতদিন সেটা চালিয়ে যেতে পারবেন। পরবর্তী ধাপগুলো কি হবে, সেগুলো পরিকল্পনা করতে হবে। আর এই পরিকল্পনাতে অন্যতম ভূমিকা রাখবে “Market Research”।  আপনার প্রথমে চিন্তা করে নিতে হবে কোন কোন ব্যবসা আপনি করতে পারবেন এরপর আপনার জরিপ করে দেখতে হবে কোনটির চাহিদা বেশি, কোনটিতে কি পরিমাণ মূলধন লাগবে,লাভের হার কেমন? “Market Research” করে আপনি আপনার ব্যবসার প্রাইমারি ডাটা পেয়ে যাবেন যা আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

পরিকল্পনার ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিবেন

১। মার্কেটে নামার আগে কয়েক ধরনের মার্কেটিং প্ল্যান সেট করুন। প্ল্যান A, B, C – এভাবে পরিকল্পনা সাজান। কি কি কারণে প্রথম প্ল্যানটি কাজ না করতে পারে, সেগুলো নির্দিষ্ট করে বোঝার চেষ্টা করুন। এরপর সেই কারণগুলো ঘটলে কি ব্যবস্থা নেবেন – তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখুন দ্বিতীয় প্ল্যান হিসেবে। আবার দ্বিতীয় প্ল্যানের ক্ষেত্রেও একই কাজ করুন। এভাবে করলে দেখবেন সম্ভাব্য সব অনিশ্চয়তা গুলো বুঝতে পারার পাশাপাশি সেই সমস্যার সমাধানও ভাবতে পারছেন। এতেকরে, বাস্তবে এইসব পরিস্থিতিতে পড়লে সহজেই বিপদ কাটাতে পারবেন।

২। মার্কেটে নেমে অনেক সময়েই দেখা যায় যা বাজেট করেছিলেন – তাতে কাজ হচ্ছে না। এই ঝামেলা এড়ানোর জন্য কিছু টাকা আলাদা করে রাখুন। বাজেট ঘাটতি পুরোপুরি পূরণ না হলেও, ধাক্কা সামলানো সহজ হয়ে যাবে।

৪। প্রথমেই একবারে না নেমে একটু একটু করে পরীক্ষামূলক ভাবে এক একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করুন। সব ডিম এক ঝুড়িতে রাখবেন না। পরীক্ষামূলক অবস্থায় যে কৌশলটি সবচেয়ে ভালো ফল দেবে – সেটাই চূড়ান্ত ভাবে কাজে লাগান।

একজন উদ্যোক্তা কখনওই অনিশ্চয়তা বা চ্যালেঞ্জ দেখে পিছিয়ে যান না। সঠিক পরিকল্পনা ও কাজ দিয়ে প্রতিটি অনিশ্চয়তাই জয় করা সম্ভব। অনিশ্চয়তার মুখে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা সফল উদ্যোক্তা হওয়ার একটি প্রধান শর্ত।

সফল উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য কি কি ধাপ আপনাকে সাহায্য করবে জানতে আমাদের সাথে যুক্ত থাকুন। আমাদের ধারাবাহিক পর্ব আপনাকে সাহায্য করার সম্পূর্ণ চেষ্টা করবে।

 

 

লিখেছেন,

আরশী হোড়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

 

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ অনুমতি ব্যতিত লেখা আংশিক বা সম্পূর্ণ কপি করা অপরাধ।

 

Leave a Reply