You are currently viewing চাহিদা – আবদুল্লাহ আল-আমিন

চাহিদা – আবদুল্লাহ আল-আমিন

 

অর্থনীতিতে চাহিদা হল কোনো পণ্য বা সেবা দ্রব্যের উপযোগের প্রয়োজনীয়তা। চাহিদা হল একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পণ্য বা সেবা গ্রহণের উদ্যেশ্যে ব্যয় করার ইচ্ছা। একজন ক্রেতা বিভিন্ন দামে যে পরিমান দ্রব্য বা সেবা পেতে ইচ্ছুক তার পরিমান এর দ্বারা চাহিদা প্রকাশ করা হয়। কোনো নির্দিষ্ট দামে ভোক্তা যে পরিমাণ দ্রব্য ক্রয় করতে আগ্রহী হয় তার পরিমাণ কে চাহিদার পরিমাণ বলে।

চাহিদার অন্যান্য নির্ধারকসমূহ অপরিবর্তিত থেকে স্বাভাবিক সময়ে কোনো দ্রব্যের দাম হ্রাস পেলে চাহিদা বৃদ্ধি পায়, দাম বৃদ্ধি পেলে চাহিদা হ্রাস পায়। দাম ও চাহিদার পরিমাণের মধ্যে এরূপ বিপরীত সম্পর্ককে চাহিদা বিধি বলা হয়। চাহিদা বিধির ক্ষেত্রে অন্যান্য নির্ধারক হল: বিকল্প দ্রব্যের দাম, পরিপূরক দ্রব্যের দাম, ক্রেতার আয়, রুচি, অভ্যাস ও সংখ্যা ইত্যাদি।

চাহিদার নির্ধারক সমুহ

অসংখ্য কারণের এবং পরিস্থিতিতে একজন ক্রেতার কোনো দ্রব্য ক্রয় করার ইচ্ছা প্রভাবিত হতে পারে। তারমধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য কারণ হল:

দ্রব্যের নিজের মুল্য:-

সাধারণত দ্রব্যের নিজেস্ব দাম ও চাহিদার মধ্যে বিপরীতমুখী সম্পর্ক কাজ করে। যখন দাম বাড়ে চাহিদার পরিমাণ তখন কমে। এই বিপরীতমুখী সম্পর্কের ফলে চাহিদারেখার ঢাল সর্বদা নিম্নগামী হয়। চাহিদা ও দামের এই বিপরীতমুখী সম্পর্ক যথাযত এবং স্বজ্ঞাত। যদি কোনো নতুন উপন্যাস এর মুল্য অনেক বেশি হয় তাহলে স্বাভাবিকভাবেই যে কোনো মানুষ এটি ক্রয় অপেক্ষা পাবলিক লাইব্রেরি হতে ধার নিয়ে পড়তে আগ্রহী হবে। 

সম্পর্কিত অন্য দ্রব্যের দাম: সম্পর্কিত দ্রব্য সাধারণত পরিপূরক ও পরিবর্তক দ্রব্য কে বুঝায়। পরিপূরক দ্রব্য হল এমন একটি দ্রব্য যা প্রাথমিক দ্রব্যের সাথে ব্যবহৃত হয়। যেমন চায়ের সাথে দুধ ও চিনি ও গাড়ির সাথে পেট্রল। নিখুঁত পরিপূরক দ্রব্য স্বতন্ত্র আচরণ করে। যদি একটি দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পায় তাহলে অপর দ্রব্যের চাহিদার পরিমাণ কমে যায় 

ভোক্তার নিজেস্ব আয়:-

একজন মানুষের নিজেস্ব আয় বাড়লে তার চাহিদার পরিমাণ ও বৃদ্ধি পাবে।

ভোক্তার ভবিষ্যৎ মুল্য ও আয় সম্পর্কে আশা:-

যদি একজন ভোক্তা বুঝতে পারে কোনো বিশেষ দ্রব্যের দাম ভবিষ্যৎ এ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহলে সে দাম বাড়ার আগেই উক্ত দ্রব্য ক্রয় করতে চাইবে। আবার যদি একজন ভোক্তা তার ভবিষ্যৎ আয় বৃদ্ধি সম্পর্কে নিশ্চিত হয় তাহলে সে বর্তমানে উক্ত দ্রব্য ক্রয় করতে চাইবে। দ্রব্যের আশানুরূপ প্রাপ্যতাও দাম ও চাহিদার ওপর পরিবর্তন আনে। 

জনসংখা:-

কোনো দেশের জনসংখা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে চাহিদাও বৃদ্ধি পায়।

দ্রব্যের প্রকৃতি:-

সাধারণ দ্রব্যের ক্ষেত্রে চাহিদার পরিমান সর্বদা বেশি হয়।

বিজ্ঞাপন:

বিজ্ঞাপন বা প্রচারের ওপরে অনেক সময় চাহিদা নির্ভর করে।

জীবনযাত্রার মান:-

দেশের জনগনের জীবনযাত্রার মান উন্নত হলে ভোগ্য দ্রব্যসামগ্রীর চাহিদা বৃদ্ধি পায়।

উপরিউক্ত নির্ধারকসমূহ ছাড়াও আরো নানা কারণে চাহিদার পরিমানের হ্রাস বৃদ্ধি ঘটতে পারে।

 

 

এখানে DD’ হয়, চাহিদা রেখা.

অর্থনীতিতে চাহিদারেখা হল একটি লেখচিত্র যেখানে কোনো দ্রব্যের দাম ও ভোক্তাদের নির্দিষ্ট দামে উক্ত দ্রব্য ক্রয় করার ইচ্ছার মধ্যকার সম্পর্ক দেখানো হয়।

 

চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতাঃ

কোনো দ্রব্যের দামের পরিবর্তন এর ফলে চাহিদার যে পরিবর্তন সংঘটিত হয় তার মাত্রাকে চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতা বলে। চাহিদার স্থিতিস্থাপকতার দ্বারা চাহিদার শতাংশিক পরিবর্তন ও দামের শতাংশিক পরিবর্তন এর অনুপাতকে বোঝায়। চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে দাম ছাড়া চাহিদার অন্যান্য নির্ধারকসমূহ অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকবে। চাহিদার দাম স্থিতিস্থাপকতার নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যে সুত্র ব্যবহার করা হয় তা হল:  (ΔQ/ΔP)×(P/Q)। এখানে Q, চাহিদার পরিমান এবং P, দ্রব্যের দাম।

চাহিদা ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি সম্পাদনা

চাহিদা ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি হল বিজ্ঞান ও কলার সংমিশ্রণ যার মাধ্যমে অর্থনৈতিক মন্দা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

উৎসঃ উইকিপিডিয়া

Leave a Reply