You are currently viewing চিন বিপ্লব

চিন বিপ্লব

চিন বিপ্লব

আমরা চিনের বিপ্লবকে ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ বিপ্লব হিসাবে বিবেচনা করতে পারি। যা ১৯১৭ সালে রাশিয়ায় সংঘঠিত বিপ্লবের পর সব চেয়ে বড় বিপ্লবী ঘটনা। এই বিপ্লব উপনিবেশ বিরোধী আন্দোলন ও সংগ্রামে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে । পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মার্কসবাদী মাও সে তুং-এর নেতৃত্বে চিনা কমিউনিস্ট পার্টি দীর্ঘকালব্যাপী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল  করে।

১৯১২ সালে মাচু রাজ পরিবারকে ক্ষমতা থেকে হটিয়ে চিনা জাতীয়তাবাদীরা ক্ষমতা দখল করে মূলত এই বিপ্লবের সূচনা করে। পরবর্তীতে সান ইয়াৎ সেন, চিয়াং কাইশেকের নেতৃত্বের চিনা ন্যাশনালিস্ট পার্টি ক্রমেই মাও সে তুং-এর নেতৃত্বে কমিউনিস্ট আন্দোলনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। ১৯৩৪ থেকে ১৯৩৫ সালের মধ্যে মাওং সে তুং ১০০০০ কি মি লং মার্চের মাধ্যমে উত্তরের দিকে অগ্রসর হন। এবং এই আন্দোলনের মাধ্যমে মাওং সে তুং চিনের কমিউনিস্ট আন্দোলনের ক্ষেত্রে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি হয়ে ওঠেন। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় কমিউনিস্ট এবং অন্য দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাপানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তাদের মধ্যেও বিরোধ দেখা দেয়। ফলস্বরূপ ১৯৪৬ সালে চিনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। কমিউনিস্ট পার্টির গণ মুক্তি ফৌজ ১৯৪৯ সালে আমেরিকা সহ সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির কৃপাধন্য শাসকদের পরাজিত করে এবং চিনে নয়াগণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন করে।

চিনে মাও সে তুংয়ের বিপ্লবের প্রধান শক্তি ছিল তাঁর বিশাল কৃষক সৈনিক বাহিনী।

চিনে ঐতিহ্যগত ভাবেই দেখা গেছে যে, কৃষকদের মাঝে প্রায়ই নানা প্রকার যুদ্ধ ও বিদ্রোহ চলে আসছিল। কিন্তু  যখন মাওয়ের নেতৃত্বে এই বিপ্লবটি সফল হল তখন কৃষক সৈনিকদের সাথে শহুরে শ্রমিক, মধ্যবিত্ত ও ছোট ব্যবসায়ীরা মিলে একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিতে পরিণত হয়।

পরবর্তীকালে শাসন ক্ষমতায় ধনী শ্রেণির আধিপত্য দূর করা এবং মেহনতি মানুষের ক্ষমতা পুনর্স্থপনের লক্ষ্যে মাও সে তুং-এর নেতৃত্বে মহান সাংস্কৃতিক বিপ্লব পরিচালিত হয় (১৯৬৬-৭৬)। অনেকেই মনে করেন, যে লক্ষ্য নিয়ে চিনে গণতান্ত্রিক বিপ্লব সম্পন্ন হয়েছিল, বর্তমান চিনের শাসকরা তার থেকে অনেকটাই সরে এসেছেন। কিন্তু মাও সে তুং-এর সংগ্রামী পথ পৃথিবীর নিপীড়িত মানুষের কাছে পথ চলার আলোকবর্তিকা হয়ে রয়েছে।

সূত্র: llcobangla.org ও somewhereinblog.net

Leave a Reply