You are currently viewing জীবনযাপন – সমরেশ মজুমদার।

জীবনযাপন – সমরেশ মজুমদার।

  • Post category:Book Review

বইঃ জীবনযাপন

লেখকঃ সমরেশ মজুমদার।

প্রকাশনীঃ সাহিত্য সংস্থা

প্রকাশকঃ রণবীর পাল

প্রচ্ছদঃ সুধীর মৈত্রী

পৃষ্ঠাঃ ১৫০


চুম্বক প্রতিক্রিয়া

আপনি খুব মনোযোগ দিয়ে উপন্যাস পড়ছেন, হঠাৎ দেখবেন আপনার শরীর টা ঝাকিয়ে উঠেছে,আপনার বাবা সামনে এসে গেছে,ভয়ে জবুথবু হয়ে বসে আছেন।দেখবেন হঠাৎ কেউ এসে আপনার সব মুসকিল আছান করে দিচ্ছে। কিভাবে বুঝবেন এসব হচ্ছে? বুঝতে হলে সমরেশ মজুমদারের জীবনযাপন উপন্যাস পড়তে হবে।

কাহিনী নির্মাণ

মানুষ আশায় বাঁচে। আমাদের জীবনে প্রতিনিয়ত বিরাজ করে সুখদুঃখ হাসি,আনন্দ,ব্যার্থতা,সফলতা উচ্চাকাঙ্ক্ষা প্রলোভন কত রকমের চাহিদা নিয়ে।আমাদের বেঁচে থাকাটাই হলো জীবন।তেমনি জীবনযাপন উপন্যাসে লেখক আমাদের পার্থিব জীবনের চিত্র তুলে ধরেছেন।আমরা কেমন জীবনযাপন করি? কে আমাদের এই কোলাহলে পাঠালেন?আমরা কিসের আশায় বাঁধি সংসার। কিভাবে জীবন নামক বেলায় আমরা পাড়ি জমাই তা নিয়ে এমন জীবন রহস্য নামক বইয়ে লেখক বিশদ বিশ্লেষণ দিয়েছেন। জীবন নামের ভেলায় ভাসতে যখন হবে তখন বইটা পড়তে হবে।লেখক এমন কতগুলো বাস্তব জীবনের চিত্র তুলে ধরেছেন এই বইয়ে যা আমাদের সবার জানা দরকার।

কাহিনী সংক্ষেপ

“হরিপদ ” একজন ব্যবসায়ী যার ব্যবসায়ের কাজের জন্য চাই প্রচুর অর্ডার। সংসার নামক ভেলায় টাকাই জীবনের সব।আধুনিকতায় বেড়ে উঠা হরিপদ একদিন পার্থিব জীবনের জন্য ছুটে যায় হরিতক বিশ্বনাথ মন্দিরে অর্ডারের খোঁজে। কিন্তু সেখানে তুলসি দাস স্বামী তার উওরাধিকারী নির্বাচন  করে রেখে যান তার শিষ্যদের দেখাশোনা করার জন্য।বিশ্বময় স্বামীজি তাকেই উপযুক্ত মনে করে সব দায়ভার তুলে দিলেন হরিপদের কাছে।হরিপদ তখন সুন্দর স্বামী।সংসার মায়া স্ত্রী পুত্র বলে যে কেউ ছিল সব ভুলে গেল।যেন বাবার দায় আমারো দায়। নিজেকে পার্থিব জীবন থেকে বিসর্জন দিয়ে ঈশ্বরের কৃপা লাভের আশায় এই আয়োজন।

“তামা” মর্ডান যুগে বেড়ে উঠা মেয়ে।কিন্তু যুগের তুলনায় তামা একটু অন্যরকম। তামার বন্ধু ক্যাথি,মাথা,লিজা,লিসা।এরা একসময় ড্রাগ নেওয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে মাথা এই ড্রাগের জন্য খুন হয়।ক্যাথিও ফেঁসে যায়। কিন্তু তামার মত বন্ধুর জন্য ক্যাথি অন্ধকার জীবন থেকে রক্ষা পায়।

“সন্ধ্যা” হরিপদের স্ত্রী যিনি আধুনিক যুগে এক গোয়ার্তমি নারী।সন্দেহে ভরপুর যার অন্তর। তবুও স্বামী সংসার রক্ষা করার দায়ে দিনের পর দিন কেটে যাওয়া এই হল জীবনযাপন।

“অবনীবাবু” যিনি একজন রাজনৈতিক কর্মী। উনার আর্দশের কাছে বার বার হেরে যায় মানুষ ।উনার রাজনৈতিক জীবনে কোন দিন অন্যায় করেনি।তবু সত্যজিৎ নামে আর একজন বড় মাপের মানুষের জন্য একদিন এক জঘন্য অপরাধীকে সাহায্য করে।সেই অপরাধী কে সাহায্য করে মুখ চাপা দিয়ে না থাকতে পেরে একদিন পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেয় অবনীবাবু। এই বিদায় কি তবে সমাজ পাল্টে দিবে?কোনদিন কি কেউ জানবে কেন অবনীবাবুর এই আকষ্মিক বিদায়…….

তনিমা, শ্যামলেন্দু, মামু, মুখেশ এরাও এই উপন্যাসে যথাযথ ভূমিকা রেখেছে।

পাঠ প্রতিক্রিয়া

এই উপন্যাসে বিশেষ কোন চরিত্র নেই।কিন্তু সামাজিকতা, আধুনিকতা, রাজনৈতিক, গোরামি,এসব নিয়ে সাধারণ জনজীবনের পেক্ষাপট তুলে ধরেছেন লেখক।  ড্রাগের মত ভয়ংকর এক নেশা কিভাবে ধ্বংস করে সমাজ। এগুলো ছোট ছোট স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের মনে কিভাবে প্রভাব ফেলে এবং কুচক্রী মহলের কাছে মানুষ কেমন প্রতারিত হচ্ছে।আবার মানুষের  উপকারে কিভাবে এগিয়ে যেতে হয়,পাশে দাঁড়াতে হয়,সবি যেন আছে এই উপন্যাসে।

লিখেছেন,

তন্নী আক্তার

Leave a Reply