You are currently viewing তরুণ তুর্কি বিপ্লব

তরুণ তুর্কি বিপ্লব

তরুণ তুর্কি বিপ্লব

জনগণের নিজস্ব ইচ্ছা, চিন্তা চেতনার প্রতিফলনের জন্য গণতন্ত্রের কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু যুগে যুগে এই গণতন্ত্র ভুলন্ঠিত হয়েছে কিছু স্বৈরাচারী শাসকের দ্বারা, আবার সেই গণতন্ত্র পুনরূদ্ধার হয় কিছু সাহসী মানুষের সময়োপযোগী পদক্ষেপের মাধ্যমে, অথবা হাজারো মানুষের রক্তের বিনিময়ে। ঠিক এই রকম একটি সাহসী পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে, তুরস্কে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, ইতিহাসের পাতায় যার নাম তরুণ তুর্কি বিপ্লব।

এই বিপ্লবের মাধ্যমে ১৯০৮ সালে তুরস্কে নতুন করে সাংবিধানিক যুগ শুরু হয়, এবং সংসদের কার্যক্রম শুরু হয়, যা ১৮৭৮ সালে সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ ২য় দ্বারা স্থগিত হয়েছিল।

এই বিপ্লবের কারণ হিসেবে অনেকগুলো ঘটনাকে চিহ্নিত করা যায়

  • ১। সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের শাসন আমলে তার প্রণীত সংবিধান প্রতিক্রিয়াশীলদের দ্বারা ব্যাপক ভাবে সমালোচিত হয়, যা পরবর্তীতে দেশ জুড়ে নৈরাজ্য এবং হিংসার সৃষ্টি করে।
  • ২। ইউরোপের বড় শক্তিগুলো আব্দুল হামিদকে পছন্দ করত না।
  • ৩। তাঁর শাসনকালে রুমানিয়া, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া তুর্কি সাম্রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
  • ৪। সুলতান দ্বিতীয় আব্দুল হামিদের স্বেচ্ছাচারিতা এবং তাঁর প্রশাসনিক ব্যবস্থার ভুলের কারণে জনমনে বিপ্লব দানা বাঁধতে শুরু করে।

তুরস্কে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের পিছনে তরুণ তুর্কি নামে একটি সংগঠনের ভূমিকা সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই তরুণ তুর্কিরা তাদের রাষ্ট্রের এই অধ‌ঃপতন কোনও ক্রমেই মেনে নিতে পারছিল না। তারা চেয়েছিল সব কিছুর শান্তিপূর্ণ সমাধান। কিন্তু সুলতানের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। তাই তারা ভিন্নপথে এগোতে বাধ্য হয়। এদের নেতা ছিলেন কামাল পাশা।

কামাল পাশার নেতৃত্বে তারা বিপ্লবের প্রস্তুতি নেয় কিন্তু তারা কিছুতেই প্রকাশ্যে এগোতে পারছিল না। সুলতানের দমন নীতির সামনে তারা অসহায় হয়ে পড়ছিল। তারা বিপ্লবের জন্য তুরস্কের ৩য় আর্মিকে প্রস্তুত করে। অবশেষে ১৯০৮ সালের জুলাইয়ের ৩ তারিখ ৩য় আর্মির সৈন্যরা ম্যাসিডোনিয়া থেকে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। বিদ্রোহী সেনাদের নেতৃত্বে ছিলেন মেজর আহমেদ নিয়াজি। যদিও সুলতান এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু এই বিদ্রোহের জনপ্রিয়তার কারণে তা সম্ভব হয়নি।

অবশেষে সুলতান আহমেদ আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় এবং ২৪ জুলাই সংসদ পুর্নবহাল হয়। কামাল পাশা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।

সূত্র: somewhereinblog.net

 

Leave a Reply