You are currently viewing তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়

তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায় (আগস্ট ২৩, ১৮৯৮-সেপ্টেম্বর ১৪, ১৯৭১) বাংলা ভাষার এক জন অন্যতম শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক, ঔপন্যাসিক ও গল্পলেখক।

১৮৯৮ সালের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার লাভপুর গ্রামে জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা-মায়ের নাম হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রভাবতী দেবী। লাভপুরের যাদবলাল হাইস্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতায় সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে ভর্তি হন।

তারাশঙ্কর কংগ্রেসের কর্মী হয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করেন। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভাবে জড়িত হয়ে পড়েন এবং এর জন্য তিনি কিছু দিন জেল খাটেন (১৯৩০ সাল)।

এক বার তিনি ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্টও হয়েছিলেন। ভগ্ন-স্বাস্থ্য ও রাজনৈতিক কার্যক্রমে জড়িত হয়ে যাওয়ার কারণে তারাশঙ্কর তাঁর পড়াশোনা আর শেষ করতে পারেননি।

জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পর পরই তিনি শান্তিনিকেতনে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে দেখা করেন। এর পরই তারাশঙ্কর নিজেকে সাহিত্যসাধনায় উৎসর্গ করেন। ১৯৩২ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস “চৈতালি ঘূর্ণি”।

১৯৪০ সালে তিনি বাগবাজার চলে আসেন ও ১৯৪১ সালে চলে যান বরানগর। তখন পুরো বিশ্বে বেজে চলেছে ২য় বিশ্বযুদ্ধের দামামা। ১৯৪২ সালে তিনি বীরভূম জেলা সাহিত্য সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। সেখানে তাঁকে ফ্যাসিবাদ-বিরোধী লেখক ও শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি মনোনীত করা হয়। ১৯৪৪ সালে তিনি কানপুরে বসবাসকারী বাঙালিদের আয়োজিত “কানপুর বাংলা সাহিত্য সম্মেলন”-এ সভাপতির পদ অলংকৃত করেন। ১৯৪৭ সালে তিনি প্রবাসী বঙ্গ সাহিত্য সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এর পর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক “শরৎ স্মৃতি পদক”-এ ভূষিত হন।

১৯৫৫ সালে তিনি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে “রবীন্দ্র পুরস্কার” লাভ করেন। ১৯৫৬ সালে “সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার” পান। ১৯৫৭ সালে তিনি চিন সরকারের আমন্ত্রণে চিন ভ্রমণে যান। এর পরের বছর তিনি অ্যাফ্রো-এশিয়ান লেখক সঙ্ঘের কমিটি গঠনের প্রস্ততিমূলক সভায় যোগদানের উদ্দেশ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন গমণ করেন। এর পর তিনি তাসখন্দে অনুষ্ঠিত অ্যাফ্রো-এশিয়ান লেখক সম্মেলনে ভারতীয় প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন। ১৯৬২ সালে তারাশঙ্কর পদ্মশ্রী ও ১৯৬৮ সালে পদ্মভূষণ উপাধিতে ভূষিত হন। তাঁর কিছু উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি

নিশিপদ্ম, ব্যর্থ নায়িকা, বিচারক, ফরিয়াদ, তামস তপস্যা, কালবৈশাখী, কালিন্দী, গণদেবতা, পঞ্চগ্রাম , আরোগ্য নিকেতন, নাগিনী কন্যার কাহিনী, রাধা, যোগভ্রষ্ট, ডাইনি, একটি প্রেমের গল্প, রাধারানী, সপ্তপদী, হাঁসুলি বাঁকের উপকথা, চিরন্তনী, কবি, কীর্তিহাটের কড়চা, চৈতালি ঘূর্ণি, ধাত্রীদেবতা, না।

এ ছাড়াও রয়েছে

গুরুদক্ষিণা, শুকসারী কথা, শতাব্দীর মৃত্যু, ইতিহাস ও সাহিত্য, নবদিগন্ত, রবীন্দ্রনাথ ও বাংলার পল্লী, ছায়াপথ, ১৯৬৯, মস্কোতে কয়েক দিন, পথের ডাক, দ্বীপান্তর, কালান্তর, সুতপার তপস্যা, একটি কালো মেয়ে, বিচিত্র, নাগরিক, কান্না, বৈষ্ণবের আখড়া সহ আরো অনেক অনবদ্য সৃষ্টি।

উপন্যাসের পাশাপাশি তারাশঙ্কর লিখে গিয়েছেন কয়েকটি নাটক

দ্বীপান্তর (১৯৪৫), পথের ডাক(১৯৪৩), দুই পুরুষ (১৯৪৩), বিংশ শতাব্দী। তাঁর সাহিত্যকর্মের উপর ভিত্তি করে নির্মিত হয়েছে একাধিক চলচ্চিত্র – জলসাঘর ও অভিযান (সত্যজিৎ রায় পরিচালিত), সপ্তপদী, বিপাশা, গণদেবতা (তরুণ মজুমদার পরিচালিত) ইত্যাদি।

সূত্র: উইকিপিডিয়া

Leave a Reply