You are currently viewing পণ্যের মূল্য নির্ধারণ কৌশল – ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

পণ্যের মূল্য নির্ধারণ কৌশল – ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

বর্তমান সময়টা তথ্য প্রযুক্তির যুগ। আর এই সময় অনলাইন ব্যবসা এর অনেক প্রসার হয়েছে । হয়ত কিছুদিন আগেও আমরা চিন্তা করতে পারতাম না, নিত্যাদিনের  জিনিসগুলো অনলাইনে অর্ডার করলে ঘরের দুয়ারে এসে হাজির হবে।

অনলাইন অথবা অফলাইন যে ব্যবসা হয়ে থাকুক  না কেন, পণ্যের মূল্য  নির্ধারন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। পণ্যের মূল্যের উপর ব্যবসা এর সফলতা অনেকখানি নির্ভর করে। তাই পণ্যের মূল্য নির্ধারনে   অনেক সচেতন হতে হয় ।

প্রথমে জেনে রাখি মূল্য সম্পর্কে।

মূল্য (Price): পণ্যের উপযোগ পেতে আমরা যা খরচ করি সেটাই মূল্য অথবা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দ্বারা যে পরিমাণ দ্রব্য ক্রয় করা যায় তাকেই মূল্য বলে। যেমন ৫ টাকা দিয়ে একটি কলম পাওয়া যায়, তাহলে  কলমের মূল্য হল ৫ টাকা।

এখন  আপনাদেরকে জানাবো বহুল ব্যবহৃত কিছু পণ্যে মূল্য নির্ধারনের কৌশল। তাহলে চলুন জেনে নেয়া যাক ।

১) ব্যয় ভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ (Cost based pricing):

যখন কোন পণ্য প্রস্তুত করার পর সেটা ভোক্তার কাছে আসা পর্যন্ত যেই খরচটুকু হয় তার সাথে লাভ যোগ করে, যখন কোন কোম্পানি তার পণ্যে মূল্য নির্ধারণ করে থাকে তখন তাকে ব্যয় ভিত্তিক পণ্যের মূল্য নির্ধারণ বলে। এইটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মূল্য নির্ধারন পদ্ধতি।

যেমনঃ একটি কলম তৈরি করতে খরচ হয় ৩ টাকা, পরিবহন বাবদ খরচ হয় ১ টাকা, আর লাভ হল ১ টাকা। তাহলে পণ্যের মূল্য হল ৩+১+১=৫ টাকা

২) প্রতিযোগিতা মূলক মূল্য নির্ধারণ (Competition Based Pricing):

যখন কোন কোম্পানি তাদের পণ্যের মূল্য, বাজারের প্রতোযোগিদের পণ্যের মূল্যর উপর ভিত্তি করে  নির্ধারণ করে  থাকে, তাকে  প্রতিযোগিতা মূলক মূল্য নির্ধারণ বলে। এই ধরনের পদ্ধতিতে পণ্যের খরচের চেয়ে বাজারের অন্য  প্রতিযোগীদের তথ্যকে বেশি মূল্যয়ন করা হয়।

যেমনঃ যখন একটি  নতুন চা পাতা বাজারে প্রবেশ করল, সেখানের বাজারে অন্য চা পাতার মূল্য ৪০০ টাকা প্রতি কেজি , কিন্তু তার যদি খরচ এর চেয়ে বেশি হয় তখন সেই কোম্পানি বাজার মূল্য এর চেয়ে বেশি মূল্য নির্ধারণ করতে পারবেন না, কেননা কেউ কিনবে না। তাই সেই নতুন কোম্পানিটিকে অন্য কোম্পানির পণ্যের মূল্য বিবেচনায় রেখে মূল্য নির্ধারন করতে হবে ।

৩) মানভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ (Value Based Pricing):

এইটি অন্য পদ্ধতি হতে ভিন্ন। এই পদ্ধতিতে ক্রেতাদের বেশি মুল্যয়ন করা হয়। একজন ক্রেতা  সিদ্ধান্ত নিবে পণ্যটার মূল্য বেশি নাকি কম। এককথায় বলা যায় ক্রেতা যদি মনে করে কোন পণ্যের দাম সেই পণ্যের জন্য যথাযথ, আর এই ক্রেতার মূল্যয়নের উপর ভিত্তি করে যখন কোন পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয় তখন তাকে মানভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ বলে।

যেমনঃ একটি মোবাইলের সব ফিচার দেখে, মনে হল এর দাম যদি ২০,০০০ টাকা হয়, তাহলে যথাযথ হবে। তখন সেই দামে যদি কোম্পানি মোবাইলটা বাজারে আনে, তখন তাকে মানভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ  বলে।

নতুন পণ্যের ক্ষেত্রে এই নিচের  ২টি পদ্ধতি বেশি ব্যবহার করা হয়।

৪) স্কিমিং মূল্য(Skimming pricing strategy):

 উচ্চ মূল্যে যখন কোন পণ্য বাজারে আনা হয় তখন তাকে স্কিমিং বলা হয় ।

যেমনঃ অ্যাপল কোম্পানি তাদের আইফোন উচ্চ মূল্য বাজারে  ছাড়ে।

৫)পেনেট্রেশন মূল্য(Penetration Pricing Strategy): নিন্ম মূল্যে যখন কোন পণ্য বাজারে আনা হয় তখন তাকে পেনেট্রেশন মূল্য বলে।

যেমনঃ IKEA  তাদের পণ্য অল্প মূল্য দিয়ে চায়নার ৪৩% বাজার দখল করে নেয়।,

লিখেছেন,

ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply