You are currently viewing পণ্যের শ্রেণিবিভাগ – ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

পণ্যের শ্রেণিবিভাগ – ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

নিত্যদিনের প্রয়োজনে আমরা অনেক পণ্য বা প্রডাক্টস কিনে থাকে। এই যেমন ধরুন আমরা নিত্যদিনের জন্য সবজি অথবা নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় দ্রব্য ক্রয় করে থাকি, সে সবকিছুই প্রোডাক্ট বা ‘পণ্য’ এর মধ্যে পড়ে। আমার মোবাইল ব্যবহার করছি সেটাও পণ্য।

সাধারণত পণ্যকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:

১) ভোগ্যপণ্য

২) শিল্পপণ্য

 

১।  ভোগ্যপণ্যঃ

ভোগ্যপণ্য হলো ওই ধরনের প্রোডাক্ট বা পণ্য যা ক্রেতা ভোগ করার জন্য ক্রয় করে থাকে বা ক্রেতার সেই পণ্যের উপযোগ নিঃশেষ করার জন্য  ক্রয় করে, অন্য কোন কিছু তৈরি করতে ব্যবহার করা হয় না । এই যেমন ধরুন আমরা নিত্যদিনের প্রয়োজনে ভোগের জন্য যে পণ্যগুলো কিনে নিয়ে আসি সেটি আমরা ভোগ করার জন্য ক্রয় করি, অন্য কোন পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে সেটি ব্যবহার করা হয় না তাই এটিকে আমরা ভোগ্যপণ্য বলতে পারি।

প্রকারভেদঃ

পৃথিবীর অনেক রকম ভোগ্যপণ্য রয়েছে।  তা নিচে আলোচনা করা হল।

 

) সুবিধা পণ্য / কনভেনিয়েন্স প্রোডাক্ট(Convenience Products):

কনভেনিয়েন্স প্রোডাক্ট হলো ওই ধরনের পণ্য যেগুলো আমার প্রতিদিন ক্রয় করে থাকি । এই পণ্যগুলো  ক্রয় করার সময় আমাদেরকে চিন্তা করতে হয় না। কেননা এই পণ্যগুলো প্রতিদিন কিনতে কিনতে আমরা অভ্যস্ত ।

আমরা ল্যাপটপ এর কথা বলতে পারি। আমরা যখন কোন ল্যাপটপ কিনতে  যাই, তখন অনেক তথ্য নিয়ে যাই। যেমন ব্র্যান্ড, মান নিয়ে চিন্তা করে তারপর কিনি, কিন্তু আমরা নিত্যদিনের পণ্যের বেলায় এত চিন্তা করে কিনি না।

আমরা খুব বেশি চিন্তা করি না, যে আমরা কি ব্র্যান্ডের বিস্কুট কিনবো বরং আমরা সরাসরি দোকানে গিয়ে যেকোনো একটা কিনে ফেলি।  এই ধরনের পন্যগুলো কে কনভেনিয়েন্স  প্রোডাক্ট বলি।

যেমনঃ নিত্যদিনের বাজরের পণ্য। 

 

) কেনাকেটার পণ্য/ শপিং প্রোডাক্ট (Shopping Products):

এই ধরনের প্রোডাক্টগুলো কিনার সময় আমরা মূল্য, স্টাইল, মান অনেক কিছু বিবেচনা করি। এই ধরনের পণ্য ক্রয় করার সময় ক্রেতারা অনেক সময় ব্যয় করে থাকে, অনেক তথ্য সংগ্রহ করে, অন্য কোম্পানির পণ্যের সাথে তুলনা করে এরপরে তারা পণ্যটা ক্রয় করে। এই ধরনের পণ্যগুলো কে আমরা শপিং প্রোডাক্ট বলতে পারি। 

যেমনঃ কাপড় ক্রয়, এ ক্ষেত্রে বর্তমানে যে ফ্যাশনটি বেশি চলছে সেটা সম্পর্কে জেনে ক্রয় করতে যায় এবং অনেকগুলো দোকান ঘুরে ঘুরে ক্রয় করে। হোটেন, বিমানসেবা গুলোর ক্ষেত্রে আমরা চিন্তা করি কোন হোটেল বা বিমানের সেবা  ভালো।

 

) বিশেষ পণ্য/ স্পেশালিটি প্রোডাক্ট_( Speciality Products):

স্পেশালিটি প্রোডাক্ট হল এমন প্রোডাক্ট যাদের একটা একক বৈশিষ্ট্য রয়েছে অথবা ব্র্যান্ড পরিচিতি থাকে।  এই ধরনের পণ্যগুলো কিছু ক্রেতারা ক্রয় করে। এই ধরনের পণ্যেরর চাহিদা সবার থাকে না।

 যেমনঃ আইফোন এ সিকিউরিটি  সিস্টেম অনেক ভালো বিধায় যারা খুব বেশি তথ্যের নিরাপত্তা চায় তারা সাধারনত এই পণ্য কিনে থাকে। আরো বলা যায় BUGATI, LAMBORGINI, ROLLS ROYCE এবং TESLA  এই ধরনের  গাড়ি ক্রয় করার চাহিদা  সবার থাকে না , একটা স্পেশিয়াল কিছু  ক্রেতা কিনে থাকে।

এই ধরনের পণ্য গুলো উচ্চমূল্য  হয়ে থাকে।

 

) অপ্রত্যাশিত পণ্য/  আনসোট  প্রোডাক্ট( Unsought Poducts):

এগুলো হচ্ছে ওই ধরনের পণ্য, যে ধরনের পণ্য সম্পর্কে কাস্টমার বা ক্রেতারা অবগত থাকেনা অথবা অবগত থাকলেও কখনো ক্রয় বা গ্রহণ করার  চিন্তা-ভাবনা করে না।

উদাহরণস্বরূপ বলা যায় লাইফ ইন্সুরেন্স । অনেকেই জানেনা এমন একটা সার্ভিস রয়েছে অথবা অনেকে জানে কিন্তু  এই ধরনের সেবা বা পণ্য গ্রহণ করতে চায় না। সাধারণত যারা লাইফ ইন্সুরেন্স গ্রহণ করে তারা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানিতে গিয়ে নিজ থেকে সেবা গ্রহণ করতে চায় না।  সার্ভিসটা গ্রহণ করায় লাইফ ইন্সুরেন্স  কোম্পানির মাকেটিং এর প্রভাব অনেক বেশি থাকে।

ব্লাড ডোনেশন ও এইধরনের পণ্যের মধ্যে পড়ে। এই ধরনের পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে অনেক বেশি বিজ্ঞাপনের প্রয়োজন হয়।  

 

 ) শিল্পপণ্য  বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্ট( Industrial Products ):

যে পণ্যগুলো  পুনরায় কোন ব্যবসার জন্য অথবা আবার প্রক্রিয়ার জন্য ক্রয় করা হয় তাকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রোডাক্ট বা শিল্পপণ্য বলে। এই ধরনের পণ্য গুলো ভোগের জন্য ক্রয় করা হয় না।

যেমনঃ যখন কোন অটোমোবাইলের কোনো পার্টস ক্রয় করে এবং পার্টসগুলো দিয়ে কোম্পানি  একটা গাড়ি তৈরি করবে, তখন সেই ক্রয় করা পণ্যগুলোকে আমরা শিল্প পণ্য বলতে পারি কেননা সেটি আবার প্রসেসিং এর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন গম প্রক্রিয়া করে হয় আবার রুটি বানানোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করে । তাহলে এইখানে গম কে আমরা ভোগ্যপণ্য না বলে শিল্পপণ্য বলবো।  যদি সরাসরি ভোগের জন্য কেনা হতো তখন গমকে ভোগ্যপণ্য বলা যেত।

বাজারে তিন ধরনের শিল্পপণ্য রয়েছে- 

 

১) মেটেরিয়াল অ্যান্ড পার্টসঃ

মেটেরিয়াল অ্যান্ড পার্টস হল কাঁচামাল এবং পুনঃউৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। 

) ক্যাপিটাল আইটেমঃ

এ ধরনের প্রোডাক্টগুলো হচ্ছে জেনারেটর ,কম্পিউটার সিস্টেম, লিফট যেগুলো কোন ব্যবসায় কাজে ব্যবহার করা হয় সেই ধরনের পণ্যগুলোকে বুঝায়।

৩) সাপ্লাই এবং সার্ভিসেসঃ

সাপ্লাই এবং সার্ভিসেস প্রডাক্টগুলো সাধারণত সেবা  হিসেবে চিন্তা করা যায়। যেমন হচ্ছে কম্পিউটার রিপেয়ার অথবা লিগেল কনসালটিং এই ধরনের সার্ভিস গুলো। সাধারণত এই ধরনের পণ্যগুলো একটি চুক্তির মাধ্যমে দেওয়া হয় ।

Leave a Reply