You are currently viewing ভালো শ্রোতা হওয়ার উপায়

ভালো শ্রোতা হওয়ার উপায়

  • Post category:Others

শ্রবণ ও ভালো শ্রোতা কাকে বলে?

শ্রবণ একধরণের বিশেষ অনুভূতি (ইন্দ্রিয়) যার মাধ্যমে পারিপার্শ্বিকের শব্দকে কর্ণ (কান) বা অনুরুপ কার্যকরী কোন অঙ্গ দ্বারা গ্রহণ, বিবর্ধন, অনুভব ও অনুধাবন করে। এই কাজটা যে প্রাণী বা ব্যক্তি দ্বারা সঠিকভাবে সম্পন্ন হয় তাকে ভালো  শ্রোতা বলে।

আমরা সবাই শ্রোতা। তবে সবাই ভাল শ্রোতা না। কিন্ত আমাদের সঠিক যোগাযোগ স্থাপনের জন্যে অবশ্যই ভাল শ্রোতা হতে হবে। 

চলুন, ভালো শ্রোতার কিছু বৈশিষ্ট্য জানা যাক! 

  • সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আগ্রহ দেখানো।  
  • বেশি শুনুন, কম বলুন
  • ধৈর্যশীল থাকা 
  • বক্তাকে বিচার করতে যথেষ্ট সময় দেওয়া 
  • সহানুভূতি প্রকাশ করা 
  • অর্থপূর্ণ ও যৌক্তিক প্রশ্ন করা 
  • সময়ে সময়ে বুঝানো যে আপনি তার কথা শুনছেন 

ভালো শ্রোতা হওয়ার প্রয়োজনীয়তা- 

ভালো বক্তা হওয়া যেমন জরুরি, তেমনি গুরুত্বপূর্ণ ভালো শ্রোতা হতে পারাটাও। স্বভাবতই মানুষ বলতে বা নিজেকে প্রকাশ করতে বেশি পছন্দ করে। তাই অন্যের সঙ্গে সঠিক যোগাযোগ স্থাপনে তো বটেই, এমনকি পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্যও ভালো শ্রোতা হওয়া ভীষণ দরকারি।

ভালো শ্রোতা হওয়ার কিছু টিপস- 

এক. মনোযোগের প্রধান বাহক হচ্ছে চোখ বা দৃষ্টি। তা দেখে একজন মানুষের প্রায় সবকিছুই আন্দাজ করা যায়। সুতরাং বক্তার বক্তব্য শোনার সময় তার আই কন্টান্ট করতে হবে। 

দুই, যে বিষয়ে কথা হচ্ছে সে বিষয়ে আপনার কোন মতামত থাকলে আলোচনা করুন। এতে বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনার আগ্রহের প্রমাণ পাওয়া যায়। তাতে বক্তাও খুশি হল।

তিন, তবে বক্তা যখন কথা বলছেন তার মাঝখানে হঠাৎ থামিয়ে দিয়ে কিছু বলে উঠবেন না। আপনি কিছু বলার আগে তার বাক্য শেষ হতে দিন।

চার, বিষয়বস্তু সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করতে গিয়ে অতিরিক্ত কথা বলা ঠিক হবে না। বক্তার স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করাই একজন ভালো শ্রোতার প্রধান কর্তব্য।

পাঁচ, বক্তার কথা শোনার সময় এমনভাবে বসা উচিত, যাতে আপনি বক্তার চেহারা ঠিকমত  দেখতে পান। বিশেষ করে বক্তার চোখ দেখতে পাওয়া খুবই দরকারি। এতে বক্তার বক্তব্যের আবেগময় বহিঃপ্রকাশও আপনার নজর এড়াবে না। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখবেন বক্তাও যেন আপনার চেহারা দেখতে পান।

ছয়, আলাপ চলাকালে মাঝে মাঝে প্রাসঙ্গিক শব্দ উচ্চারণ করে আপনার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করুন। যেমন— তাই নাকি? বলেন কী সর্বনাশ, কী সাংঘাতিক। ‘নিশ্চয়ই, ‘বাহা’  ‘এটা খুব ভালো  বলেছেনা’ ‘কী করে হলো? ইত্যাদি। এতে বক্তা আপনার মনোযোগ বুঝতে পারবেন।

সাত, একজন আদর্শ শ্রোতা কখনো কখনো বক্তাকেও নিয়ন্ত্রণ করেন, যাতে আলোচনা প্রাসঙ্গিক থাকে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হয় শ্রোতাকে। প্রয়োজনে বক্তাকে নিয়ন্ত্রণও করতে হতে পারে।

আট, একজন ভালো শ্রোতা ভালো স্মরণশক্তির অধিকারীও হন। বক্তা মাঝে মাঝেই কথা বলতে গিয়ে কী প্রসঙ্গে আলোচনা করতে চাচ্ছিলেন সেটা ভুলে যান। তখন শ্রোতাকে তা মনে করিয়ে দিতে হয়। তা ছাড়া আলোচনা শেষ হওয়ার পরও নানা কারণে কী বিষয়ে কী কী আলোচনা হলো  তা পুনারাবৃত্তি করার প্রয়োজন পড়ে। ভালো শ্রোতাকে এসব ব্যাপারে বিশেষ মনযোগী হতে হয়।

নয়, গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় একজন ভালো শ্রোতা কাগজ-কলম নিয়ে বসবেন। প্রয়োজনীয় অংশ নোট নেবেন। প্রয়োজন হলে রেকর্ডারও ব্যবহার করতে পারেন।

দশ, অনেক সময় আবার ভালো শ্রোতার অভিনয়ও করতে হয়। দেখা যায় এমন পরিস্থিতির সুষ্টি হলো  যে, বক্তার কথা শুনতে একদমই ভালো লাগছে না, কিন্তু না শুনেও উপায় নেই। আর কেবল শুনলেই হবে না, এটাও প্রমাণ করতে হবে যে আপনি মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। এমন ক্ষেত্রে এমনভাবে বসুন, যাতে আপনার মুখে সরাসরি আলো না পড়ে। বাকি সময়টুকুতে আপনার একমাত্র কাজ হবে তার চোখে চোখ রেখে মাঝে মাঝে সম্মতিসূচক মাথা নেড়ে যাওয়া। তাহলে বক্তার মনে হবে আপনি মনোযোগ দিয়ে তার কথা শুনছেন। 

Leave a Reply