You are currently viewing মদনমোহন তর্কালঙ্কার

মদনমোহন তর্কালঙ্কার

মদনমোহন তর্কালঙ্কার

মদনমোহন তর্কালঙ্কার বাংলার নবজাগরণের অন্যতম অগ্রদূত। ভারতীয় উপমহাদেশের উনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম পণ্ডিত, যিনি বাংলা লেখ্য ভাষার বিকাশে বিশেষ অবদান রেখে গেছেন।
১৮১৭ খ্রিষ্টাব্দে নদীয়া জেলায় নাকশীপাড়ার বিল্বগ্রামে হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।তার পিতার নাম রামধন চট্টোপাধ্যায়।
মদনমোহন তর্কালঙ্কার সংস্কৃত কলেজে শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং সেখানে তিনি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের সহপাঠী ছিলেন।

তিনি ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ১৮৫০ সালে মুর্শিদাবাদ জেলার বিচারক নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে ১৮৫৫ সালে মুর্শিদাবাদে এবং ১৮৫৬ সালে কান্দিরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত হয়েছিলেন। তিনি হিন্দু বিধবা বিবাহ প্রথার অন্যতম প্রবক্তা। স্ত্রী শিক্ষার প্রসারেও তার অবদান অনস্বীকার্য। ১৮৪৯ সালে বেথুন কর্তৃক হিন্দু মহিলা স্কুল প্রতিষ্ঠিত হলে নিজের দুই মেয়েকে সেখানে ভর্তি করেন। তিনি নিজেও বিনা বেতনে এই শিক্ষকতা করেন। ১৮৫০ সালে স্ত্রী শিক্ষার পক্ষে “সর্ব শুভকরী” পত্রিকায় একটি যুগান্তকারী প্রবন্ধ লেখেন।
 
তার রচিত “শিশুশিক্ষা” গ্রন্থটি ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর রচিত “বর্ণপরিচয়” গ্রন্থটির পূর্বে প্রকাশিত হয়েছিল।তার রচিত “আমার পণ” কবিতাটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের বাংলা পাঠ্যবইয়ের অন্যতম একটি পদ্য এবং শিশু মানস গঠনের জন্য চমৎকার দিক-নির্দেশনা হিসেবে বিবেচিত। তার বিখ্যাত কিছু পঙ্কক্তির মধ্যে রয়েছে-

‘পাখি সব করে রব, রাতি পোহাইল’
“সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি
সারাদিন আমি যেন ভালো হয়ে চলি”।


তিনি ১৪ টি সংস্কৃত বই সম্পাদনা করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ হলো- রসতরঙ্গিনী, বাসবদত্তা, শিশু শিক্ষা-৩ খন্ড।

১৮৫৮ সালে ৯ মার্চ কান্দিতে কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়ে এই কিংবদন্তী মৃত্যুবরণ করেন। বাংলা সাহিত্যে লেখ্য ভাষার বিকাশে তার অবদান অতুলনীয়। 

লিখেছেন-

নাহিদা সুলতানা ইলা

শেরপুর সরকারি কলেজ। 

Leave a Reply