You are currently viewing রামরাম বসু

রামরাম বসু

 রামরাম বসু

বাংলা গদ্য সাহিত্যের প্রচলন ঘটে আধুনিক যুগে।আধুনিক যুগের সূচনা হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে। অষ্টাদশ শতাব্দীর বাংলা গদ্যসাহিত্য আদি লেখকদের একজন রামরাম বসু। তার জন্ম ১৭৫১ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার চুঁচুড়ায়।

তিনি বাঙ্গালা ভাষায় কয়েকটি খ্রিস্টধর্ম বিষয়ক বই লেখেন।যেমনঃ রামায়ণ, মহাভারত এবং তিনি যখন ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে উইলিয়াম কেরির মুন্সী ও সংস্কৃতের সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি করতেন তখন তিনি উইলিয়াম কেরিকে বাইবেল অনুবাদেও সহায়তা করতেন। রামরাম বসু একাধারে বাংলা,সংস্কৃত ও ফারসি ভাষায় পারদর্শী ছিলেন,কিছু ইংরেজিও জানতেন।ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে নিযুক্ত হওয়ার পূর্বে তিনি ভারতে খ্রিস্টধর্ম প্রচারে আসা মিশনারী পাদ্রীদের বাংলা শেখাতেন।তার রচিত “রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র” বাঙ্গালির লেখা প্রথম বাংলা মৌলিক গদ্যগ্রন্থ ও ছাপাখানার মুদ্রিত প্রথম বই। বইটি ১৮০১ সালের জুলাই মাসে শ্রীরামপুর মিশন প্রেস থেকে প্রকাশিত হয়।

রামরাম বসু নিজে রাজা প্রতাপাদিত্যের বংশধর হওয়ার কারণে তার প্রধান কীর্তি বাংলা গদ্যে রচিত ষোড়শ শতাব্দীর বারো ভুঁইয়ার অন্তর্গত বাঙ্গালি জমিদার প্রতাপাদিত্যের জীবনী- ” রাজা প্রতাপাদিত্য চরিত্র” গ্রন্থে ঐতিহাসিক ও লোকশ্রুতির সমাহার পুঙ্খানুপুঙ্খুভাবে লিপিবদ্ধ করতে পেরেছেন।

১৭৯৫ সালের জুন মাসের ১৫ তারিখে কেরি মালদহ মদনবাটি নীলকুঠির তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত হলে তিনিও সঙ্গেই যান। ১৮০১ সালের ৪ মে রামরাম বসু ফোর্ট উইলিয়াম কলেজে বাংলা বিভাগে দ্বিতীয় পণ্ডিত পদে মাসিক ৪০ টাকা বেতনে নিযুক্ত হন। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি অনুবাদ ও সাহিত্য রচনা করতেন। ‘গসপেল মেসেন্জার’ গ্রন্থটি “হরকরা” নামে কবিতায় অনুবাদ করেন। পরবর্তীতে এটি ওড়িয়া ও হিন্দিতেও অনূদিত হয়।১৮০০ সালে তিনি শ্রীরামপুরে ব্যাপটিস্ট মিশন মুদ্রাযন্ত্র ও বাংলা বিদ্যালয়ে জুন মাসে নিযুক্ত হন। ১৮০০ সালেই তিনি ” জ্ঞানোদয় ও খৃষ্টবিরণাংমৃতং” নামে কবিতায় খ্রিষ্ট চরিত রচনা করেন।

“লিপিমালা” নামে আরেকটি গ্রন্থ এটিও বাংলা গদ্যে ১৮০২ সালে শ্রীরামপুর থেকে প্রকাশিত হয়।তিনি তার দীর্ঘ সাহিত্য জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন অবদানের পাশাপাশি আমাদের আধুনিক যুগের এক নতুন অধ্যায় শুরু করে দিয়ে অবশেষে ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ৭ই আগস্ট ১৮১৩ সালে ইহলোকের মায়া কাটিয়ে পরলোকে চলে যান এই অনন্য সাহিত্যিক রামরাম বসু।আমরা বাঙ্গালিরা তার প্রতি চির কৃতজ্ঞ। 


লিখেছেন-

নাহিদা সুলতানা ইলা

শেরপুর সরকারি কলেজ। 

Leave a Reply