You are currently viewing Porter’s Five Forces Model-ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

Porter’s Five Forces Model-ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

আমরা আশেপাশে  অনেকগুলো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান দেখতে পায়, হরেক রকমের পণ্য নিয়ে হরেক রকমের ব্যবসা। বাংলাদেশের অর্থনীতি সেই সব ব্যবসা নির্দিষ্ট শিল্পের মধ্যে অর্ন্তভুক্ত করেছে। যেমনঃ পোশাক শিল্প, পানীয় শিল্প।

প্রতিটি শিল্প, একেই ধরনের অনেকগুলো পণ্য  নিয়ে গঠিত হয়। আমরা যখন কোন ব্যবসার সফলতা অর্জন করতে চাই তখন সেই পণ্যের শিল্প নিয়ে আমাদেরকে বিস্তারিত জানতে হবে। যদি তা না হয়, ঐ শিল্পের কোথায় কি সম্ভাবনা লুকিয়ে রয়েছে, এবং  কোন ফ্যাক্টর গুলো আমাদের ব্যবসার জন্য হুমকি সেগুলো জানতে পারব না।  

আর এই সমস্যা সমাধানের জন্য MICHEL E. PORTER, ১৯৭৯ সালে “PORTER FIVE FACTOR”  ধারনা দেন । আজ আমরা সেই পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করব।

এই পদ্ধতিটি ব্যবহার করা হয়, যেন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো, ঐ শিল্পের সম্ভাবনা যাচাই করতে পারে এবং নিজের প্রতিষ্ঠানের পজিশন কি হবে তা নিয়ে ধারনা নিতে পারে । এই পদ্ধতি  নিয়ে বিশ্লেষণ করে একটি ফার্ম  তার প্রতিষ্ঠানের জন্য কোনগুলো  হুমকি এবং কোনগুলো তার ফার্ম এর জন্য সুযোগ এবং কিভাবে হুমকি গুলো সুযোগে রুপান্তর করা যায় তা সম্পর্কে জানতে পারবে।

এই পদ্ধতিতে পাঁচটি ফ্যাক্টর নিয়ে আলোচনা করা হয় সেগুলো হলঃ

১) সহজে শিল্পে প্রবেশ (Ease of Entry)

২) যোগানদাতার ক্ষমতা (Power of Supplier)

৩) ক্রেতার ক্ষমতা ( Power of Buyer)

৪) পরিবর্তক দ্রব্য এর প্রাপ্যতা (Availability of Subtitutes )

৫) শিল্পের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা (Competition  in the Industry)

ফ্যাক্টরগুলো নিচে আলোচনা করা হল। 

১) সহজে শিল্পে প্রবেশঃ

যখন কোন শিল্পে নতুন কোন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান প্রবেশ করে, তখন পুরোনো ব্যবসায়ীদের পণ্যের  চাহিদা কমে যায়, এবং তাদের  মার্কেট শেয়ারের উপর প্রভাব পড়ে। অনেক সময় নতুন ব্যবসায়ীরা নতুন পণ্য  বা নতুন প্রযুক্তি এনে পণ্যের  দাম কমিয়ে ফেলে তখন আগের ব্যবসায়ীরা পণ্যের  দাম নিয়ে প্রেসার পড়ে।  সহজ প্রবেশ  নির্দিষ্ট  শিল্পের বর্তমানের ব্যবসায়ীদের কাছে হুমকি স্বরূপ ।  যেই শিল্পে প্রবেশে বাধা বেশী সেই শিল্পের বর্তমান এর ব্যবসায়ীরা বেশী নিরাপত্তা মনে করে, ঝুঁকি কম থাকে, আর যেই শিল্পে প্রবেশের বাধা খুব কম থাকে সেখানে ঝুঁকি বেশী থাকে। নতুন যারা ব্যবসা করবে তাদের দিক থেকে চিন্তা করলে যেই শিল্পে প্রবেশ সহজ সেটাই ভালো।

 যেমন ধরুনঃ বাংলাদেশ এর অস্ত্র শিল্পে যে কেউ চাইলে প্রবেশ করতে পারবে না।  এই শিল্পে প্রবেশ এর বাধা টা অনেক বেশী।

) যোগানদাতার ক্ষমতা (bargaining power of supplier)

যারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে  কাঁচামাল, উপাদান যোগানদাতা অথবা শ্রমিক যোগান দেয়, তারা মাঝে মাঝে যখন বাজারে যোগানদাতা কম থাকে তাদের  যোগান ক্ষমতা দেখায়।

যেমন ধরুনঃ আপনার চিনি কারখানা আছে আর আপনাকে আখ যোগান দেয় বাজারে একমাত্র বাগান, তারা যদি টাকা বেশী চায় তাহলে আপনার কোন উপায় থাকবে না । বাজারে যোগানদাতার ক্ষমতা বেশী থাকলে তারা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান  গুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করে। তাই একটি শিল্প বিশ্লেষণ করতে গেলে যোগানদাতার  ক্ষমতা  ও বিবেচনা করতে হবে।

৩)  ক্রেতার ক্ষমতা (power of buyer)ঃ

একটি শিল্পে ক্রেতাদের কতটুকু ক্ষমতা সেটাকে বুঝানো হয়েছে। যখন একটি শিল্পে ক্রেতাদের ক্ষমতা বেশী থাকে তখন তারা পণ্যের  মূল্যের প্রভাব ফেলে। ক্রেতা বিক্রেতার সাথে দর কষাকষি করতে পারে । এবং পণ্যের মূল্য কমে যায়।

যদি কোন শিল্পের বিক্রেতা বেশী কিন্তু সেই তুলনায় ক্রেতা কম তখন ক্রেতার প্রভাব বেশী হয়ে যায়। কেননা তাদের কাছেই বিক্রি করতে  হবে।  আর ক্রেতাদের যদি বিকল্প থাকে তখন উলটো 

৪) পরিবর্তক দ্রব্য এর প্রাপ্যতা( Availability of Subtitutes )ঃ

যখন কোন অর্থনৈতিক সমস্যার জন্য একাধিক ধরনের পণ্য দিয়ে একই সমস্যার সমাধান করা যায় তখন পণ্য গুলো একে অপরের পরিপূরক।

যেমনঃ পানি এর পরিবর্তে  আমরা কোল্ড ড্রিংক্স পান করতে পারি। আমরা অনেক সময় চা এর পরিবর্তে কফি খেতে পারি।

কোন শিল্পে যদি অনেক বেশী পরিবর্তক দ্রব্য থাকে তাহলে মাঝে মাঝে ঝুঁকি বেশী নিতে হয়।

যেমন ধরুন আমরা যখন দেখি চা এর চেয়ে কফির দাম কম। তখন আমরা চা না খেয়ে কফি খাই। তাই পরিবর্তক দ্রব্য এর মূল্য অন্য পণ্যের  মূল্যের উপর অনেক প্রভাব ফেলে। 

তাই নির্দিষ্ট শিল্পে পণ্যের পরিবর্তক দ্রব্য কতগুলো আছে এবং কোন অবস্থায় আছে সেটা জেনে রাখা ভালো।

৫) শিল্পের অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা (Competition in the industry);

যখন কোন শিল্পে অনেক বেশী প্রতিযোগিতা থাকবে তখন সেই ধরনের শিল্পে টিকে থাকা কঠিন। প্রতিযোগিদের সম্পর্কে জানতে পারলে সাফল্য এর পথ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে। যেমন এখন বাজারে নতুন ধরণের কোমল পানীয় আনলে বাজারে টিকে থাকা কঠিন হবে। কেননা কোকা কোলা সহ অন্যান্য পানীয় ইতি মধ্যে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। তাই নতুন কোম্পানির জন্য কষ্টকর হবে। যদি বাজারে শেয়ার বৃদ্ধি করতে হয় তাহলে পণ্য  নতুনত্ব নিয়ে আসতে হবে এবং ভোক্তাদের মনে জায়গা করে নিতে হবে।

এই ছিল পোর্টার এর পাঁচটি ফ্যাক্টর যা শিল্প বিশ্লেষণ করতে অনেক সাহায্য করে।­­­­­

 

 

লিখেছেন, 

ইসমাইল আহমেদ ফরহাদ

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

Leave a Reply