You are currently viewing আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস

  • Post category:অ - ঔ

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস (১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৪৩ – ৪ জানুয়ারি ১৯৯৭) বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক। তিনি একজন স্বল্পপ্রজ লেখক ছিলেন। দুইটি উপন্যাস, গোটা পাঁচেক গল্পগ্রন্থ আর একটি প্রবন্ধ সংকলন এই নিয়ে তার রচনাসম্ভার। বাস্তবতার নিপুণ চিত্রণ, ইতিহাস ও রাজনৈতিক জ্ঞান, গভীর অন্তর্দৃষ্টি ও সূক্ষ্ম কৌতুকবোধ তার রচনাকে দিয়েছে ব্যতিক্রমী সুষমা। বাংলা সাহিত্যে সৈয়দ ওয়ালীউল্লাহর পরেই তিনি সর্বাধিক প্রশংসিত বাংলাদেশী লেখক। তাকে সমাজবাস্তবতার অনন্যসাধারণ রূপকার বলা হয়েছে।

প্রাথমিক জীবন

আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস ১৯৪৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের গাইবান্ধা জেলার গোটিয়া গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি বগুড়া জেলায়। তাঁর বাবা বদিউজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াস পূর্ব বাংলা প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (১৯৪৭-১৯৫৩) এবং মুসলিম লীগে পার্লামেন্টারি সেক্রেটারি ছিলেন। তাঁর মায়ের নাম বেগম মরিয়ম ইলিয়াস। আখতারুজ্জামান বগুড়া জিলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষা এবং ঢাকা কলেজ থেকে ১৯৬০ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন (১৯৬৪)।

কর্মজীবন

আখতারুজ্জামান মোহাম্মদ ইলিয়াসের কর্মজীবন শুরু হয় জগন্নাথ কলেজে প্রভাষক পদে যোগদানের মাধ্যমে। এর পর তিনি মিউজিক কলেজের উপাধ্যক্ষ, প্রাইমারি শিক্ষা বোর্ডের উপ-পরিচালক, ঢাকা কলেজের বাংলার প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মফিজউদ্দিন শিক্ষা কমিশনের সদস্য ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় পরিচিত মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দেন, গোপনে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তাঁর লেখা প্রতিশোধ, অন্য ঘরে অন্য স্বর, খোঁয়ারি, মিলির হাতে স্টেনগান, অপঘাত, জাল স্বপ্ন স্বপ্নের জাল, রেইনকোট প্রভৃতি গল্পে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষ ভাবে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ও যুদ্ধপরবর্তী রাজনৈতিক এবং সামাজিক বাস্তবতা। ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠিত হলেও সরকারি কলেজের শিক্ষক হিসেবে বাকশালে যোগ দেওয়ার চাপ থাকলেও যোগ দেননি।

সম্মাননা

আখতারুজ্জামান ইলিয়াস সম্পর্কে পশ্চিমবঙ্গের প্রখ্যাত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী বলেছেন, “কি পশ্চিমবাংলা কি বাংলাদেশ সবটা মেলালে তিনি শ্রেষ্ঠ লেখক।” লিখেছেন, “ইলিয়াস-এর পায়ের নখের তুল্য কিছু লিখতে পারলে আমি ধন্য হতাম।” ১৯৮৩ সালে বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার পান। ১৯৯৬ সালে আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হন। সারা জীবন লড়াই করেছেন ডায়াবেটিস, জন্ডিস-সহ নানাবিধ রোগে। ১৯৯৭ সালের ৪ঠা জানুয়ারি আখতারুজ্জামান ইলিয়াস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা কম্যুনিটি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

গ্রন্থতালিকা

উপন্যাস

  • চিলেকোঠার সেপাই (১৯৮৭)
  • খোয়াবনামা (১৯৯৬)
  • ছোট গল্প সংকলন
  • অন্য ঘরে অন্য স্বর (১৯৭৬)
  • খোঁয়ারি (১৯৮২)
  • দুধভাতে উৎপাত (১৯৮৫)
  • দোজখের ওম (১৯৮৯)
  • জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল (১৯৯৭)
  • প্রবন্ধ সংকলন
  • সংস্কৃতির ভাঙ্গা সেতু (২২টি প্রবন্ধ)
  • ছোট গল্প তালিকা
  • প্রেমের গপ্পো
  • রেইনকোট
  • জাল স্বপ্ন, স্বপ্নের জাল
  • ফোঁড়া
  • কান্না
  • নিরুদ্দেশ যাত্রা
  • যুগলবন্দি
  • ফেরারী
  • অপঘাত
  • পায়ের নিচে জল
  • দুধভাতে উৎপাত
  • সন্তু
  • ঈদ
  • মিলির হাতে স্টেনগান

পুরস্কার

  • হুমায়ুন কবির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৭৭)
  • বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৩)
  • আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৭)
  • আনন্দ পুরস্কার (১৯৯৬)
  • সাদাত আলি আখন্দ পুরস্কার (১৯৯৬)
  • কাজী মাহবুবুল্লাহ স্বর্ণপদক (১৯৯৬)
  • একুশে পদক (মরণোত্তর) (১৯৯৯)

সূত্র : উইকিপিডিয়া

Leave a Reply