You are currently viewing লেখার কালি কিভাবে এলো?

লেখার কালি কিভাবে এলো?

  • Post category:Others

কথায় বলে, একবার লেখা আর দশবার পড়া সমান৷ এছাড়া স্কুল,  কলেজ, অফিস, আদালতসহ সব জায়গায় এই লেখালেখির গুরুত্বের শেষ নেই৷ আর এই লেখার কাজটি সম্পন্ন করতে  যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, সেটি হলো ‘কালি’। 

একটা সময় যখন অত্যাধুনিক কলমের আবিষ্কার হয়নি তখনও পাখির পালক দিয়ে কালির সাহায্যে লেখা হতো,  পরর্বতীতে যখন ফাউন্টেন পেন আবিষ্কার হলো তখনও এই কালির সাহায্যে লেখার কাজ সম্পন্ন হতো  ৷ এখন জেনে নিই এই কালি আসলে আসলো কোথা থেকে এর বাসাবাড়ি কোথায়! 

প্রাচীন প্যাপিরাসের উপর লেখাকে ভালোভাবে পরীক্ষা করেছেন বিশেষজ্ঞরা ৷ তারা জানতে পেরেছেন, মিশরীয়দের দ্বারা আবিষ্কৃত কালির প্রধান উপাদান অঙ্গার বা কার্বন ৷ মিশরীয় লিপিকার ভূষার সঙ্গে আঠা মিশিয়ে কালি তৈরি করতেন, ওকে ভূষা কালি বলা হতো এবং এই ভূষা কালির প্রচলন  ছিল দীর্ঘকাল ৷  সম্ভবত:  প্রাচীনকালে ভারতই প্রথম   রাসায়নিক উপায় কালি প্রস্তুত করেছিল ৷  হিরাকষের সঙ্গে হরতকি মিশিয়ে তৈরি হতো কালি ৷ এই হিরাকষ হচ্ছে  ফেরাস সালফেট ৷  আর হরিতকীতে থাকে গলট্যানিক এসিড ৷ এই দুইটি রাসায়নিক পদার্থের মিশ্রণের ফলে তৈরি হতো কালি ৷  পরের দিকে অর্থাৎ মধ্য যুগে ফেরাস সালফেটের সঙ্গে গলনাট মিশিয়ে কালি তৈরি করলো পাশ্চাত্যের দেশগুলো ৷  গলনাট  পাওয়া যায় ওক গাছ থেকে, এই ওক গাছ ইংল্যান্ড, আমেরিকা প্রভৃতি দেশে প্রচুর পরিমাণে জন্মায় ৷ গলনাট কিন্তু ওক গাছের ফল নয় ৷ এটা এক ধরনের পোকা যার নাম গলওয়াপস ওক পাতাকে আক্রমণ করে ৷ ওক গাছের পাতায় পাতায় ডিম পাড়ে প্রচুর পরিমাণে ৷ পোকাদের আক্রমণে পাতার শিরা গুলো নষ্ট হয়ে যায়৷   

তখন ওক গাছ তার স্বাভাবিক নিয়মে বিনষ্ট  শিরার ক্ষতস্থানকে ঢাকতে এক ধরনের রস বের করে এবং সেই রসের প্রলেপ ধীরে ধীরে ক্ষতস্থানে শক্ত হয়ে সৃষ্টি করে গলনাট ৷ গলনাটের উপাদান ট্যানিক এসিড, গলনাটকে শুকিয়ে নেয়ার পর ভালোভাবে গুড়ো করে নেয়া হয় ৷   এবং ঐ গুড়ো সঙ্গে এলকোহল মেশানো হয় ৷  তাতেই তৈরি হয় গলট্যানিক এসিড ৷  যা লেখার কালির ভাল একটি উপাদান ৷ হরতকি, আমলকী,  প্রভৃতিতে উক্ত এসিড পাওয়া গেলেও গলনাটের মতো এত বেশি নেই ৷  বর্তমানে একই পদ্ধতি অনেক ক্ষেএে অনুসরণ করা হয় ৷ গলট্যানিক এসিডের  সঙ্গে ফেরাস সালফেট, ও সালফিউরিক এসিড, গদ,ফেনল মেশানো হয়, সাথে রঙও মেশানো হয়ে থাকে৷ 

কালিটা লেখার সঙ্গে সঙ্গে শুকিয়ে যায়, তার জন্যে স্পিরিট মেশানে হয়ে থাকে ৷  

এটাই আমাদের বহুল ব্যবহৃত কালির ইতিহাস। 

#Book_festival

Leave a Reply