You are currently viewing KFC

KFC

বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তর ফাস্টফুড চেইন এবং বিক্রয় ভিত্তিয়ে বৃহত্তম মুরগীর রেস্তোরাঁ হলো KFC বা Kentucky Fried Chicken. এটি যুক্তরাষ্ট্রের কেন্টাকি অঙ্গরাজ্যের লুইসভিলে বেড়ে উঠা একটি ফুড চেইন যা মূলত এর ফ্রাইড চিকেনের জন্য সুখ্যাতি লাভ করেছে। ৭৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কেএফসি’র ভাজা মুরগী গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন করে আসছে।

বিশ্বজুড়ে ১২০ টিরও বেশি দেশে প্রায়  ১৮০০০ রেস্তোরাঁ এবং ৭৫০০০০ এরও বেশি সংখ্যক কর্মীর সাহায্যে কেএফসি গ্রাহকদের কাছে তাদের খাদ্যপণ্য পৌঁছে দিচ্ছে।

কিন্তু কিভাবে আবিস্কৃত হয়েছিল এই ফ্রাইড চিকেনের রেসিপি? জেনে নেয়া যাক এর রহস্য!

আসল কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন বা কেএফসি’র প্রতিষ্ঠাতা হলেন কর্ণেল হারল্যান্ড স্যান্ডার্স নামের একজন আমেরিকান ব্যবসায়ী। ১৮৯০ সালে ইন্ডিয়ানার হেনরিভ্যালি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরের একটি বাড়িতে স্যান্ডার্স জন্মগ্রহণ করেছিলেন। খেতমজুর, ফায়ারম্যান, সেলসম্যান, টায়ারবিক্রেতা, ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী ইত্যাদি একের পর এক চাকরি করেও স্যান্ডার্স তাঁর উড়ু উড়ু স্বভাবের জন্য কোথাও স্থায়ী হতে পারেন নি। পরবর্তীতে তিনি কেন্টাকি শহরে পাড়ি জমান এবং সেখানেই বসবাস শুরু করেন। ১৯৩০ দশকের মাঝামাঝি সময়ে স্যান্ডার্স কেন্টাকি শহরে নিজ বাড়ি থেকে ভোক্তাদের খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন। তখনও তাঁর কোনো নিজস্ব রেস্তোরাঁ ছিলো না। পরবর্তীকালে ১৯৩৯ সালে নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশেভ্যালিতে তিনি একটি মোটেল এবং ক্যাফে কেনেন। এখানে স্যান্ডার্স বিভিন্নভাবে মুরগির স্বাদ নিতে নানান সিজনিংয়ের সাথে পরীক্ষানিরীক্ষা শুরু করেন যা ভ্রমণকারীদের পছন্দ হয়েছিলো এবং যার জন্য তিনি শীঘ্রই বিখ্যাত হয়ে ওঠেন। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে ওই বছরের নভেম্বরে তাঁর মোটেলটি এক অগ্নিকাণ্ডে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এ ঘটনার পর স্যান্ডার্ মোটেলটিকে ১৪০ আসনের এক রেস্টুরেন্টে পরিণত করেন। পরবর্তী নয় বছরে তিনি 11 টি মশলার গোপন রেসিপি এবং বেসিক রান্নার কৌশল আবিষ্কার করেন যা আজও ব্যবহৃত হয়ে আসছে।সে বছর তাঁর এই আবিষ্কার প্রথম ডানকান হাইনস “অ্যাডভেঞ্চারস ইন গুড ইটিং” এ তালিকাভুক্ত হয়েছিল।

১৯৫২ সালে স্যান্ডার্স সিদ্ধান্ত নেন ‘চিকেন ফ্রাই’ ধারণাটাকে তিনি তাঁর আয়ের উৎসে পরিণত করবেন ।এই লক্ষ্যে তিনি শহর থেকে শহরে ভ্রমণ এবং রেস্তোঁরা মালিক ও কর্মচারীদের জন্য মুরগির ব্যাচ রান্না করে সক্রিয়ভাবে তার মুরগির ব্যবসায় প্রসারে কাজ শুরু করেন।

শেষমেশ স্যান্ডার্স ও তাঁর স্ত্রী মিলে সেলবাইভ্যালিতে একটি রেস্তোরাঁ খুলতে সক্ষম হন। তাঁদের রেস্তোরাঁ ব্যবসাটা ব্যাপকভাবে সফল হয়।

১৯৫৫ সালে স্যান্ডার্স তাঁর ফ্রাইড চিকেনের  ব্যবসার সম্প্রসারণ শুরু করেন এবং ১০ বছরের মধ্যে কানাডা,চীন,যুক্তরাষ্ট্র,যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর ৬০০টি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি এ রেস্তোরাঁ দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এবং লোগোতে তাঁর ছবি থাকবে এই চুক্তিতে এক আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন।১৯৬৬ সালে এ প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী পাবলিক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত হয়।১৯৯১ সালে সার্বজনীনভাবে এই কোম্পানির নাম রাখা হয় KFC!

২০০২ সাল থেকে কেএফসি যুক্তরাষ্ট্রের “ইয়াম!” ব্র্যান্ডস্ ইনকরপোরেটেডের একটি সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় পরিচালিত হচ্ছে।

বর্তমানে কে না জানে কেএফসি’র বিপুল জনপ্রিয়তার কথা!

লিখেছেন,

সানজিদা রশিদ।

Leave a Reply